দোরগোড়ায় মাধ্যমিক। জোরকদমে চলছে পরীক্ষার প্রস্তুতি। সঙ্গে রয়েছে টেনশনও। পরীক্ষার একেবারে শেষ দিকে ২০ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার রয়েছে ভৌতবিজ্ঞান। এই বিষয়টির দু’টি ভাগ—পদার্থবিদ্যা এবং রসায়নের নানা জটিল সূত্র, সমীকরণ বা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কী ভাবে সহজেই মনে রাখা যায়, কী ভাবে প্রস্তুতি নিলে পরীক্ষায় ভাল নম্বর পাওয়া সম্ভব, সে সব নিয়েই রইল কিছু পরামর্শ।
সিলেবাস খুঁটিয়ে দেখা: ভৌতবিজ্ঞান বইয়ের প্রথমেই সম্পূর্ণ পাঠ্যসূচি দেওয়া থাকে। সেখানে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা থাকে, পড়ুয়াদের কী কী পড়তে হবে আর কী কী পড়তে হবে না। এ ছাড়া, অনেক অধ্যায়ের আলোচনা অংশেও কিছু বিষয় উল্লেখ করা থাকে, সেগুলি বাদ দিলেও চলবে না। যেমন, ‘পরিবেশের জন্য ভাবনা’ অধ্যায়ের আলোচনা অংশে লেখা আছে— “স্পষ্ট ভাবে উল্লিখিত হওয়া প্রয়োজন যে ও২ এবং এন২ গ্রিনহাউস গ্যাস নয়।” এই অংশ থেকে একটি এমসিকিউ প্রশ্ন আসতে পারে, বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে কোন গ্যাসের ভূমিকা নেই। সে ক্ষেত্রে কিছু গ্যাসের নামের বিকল্প দেওয়া থাকবে। এর মধ্যে থেকে সঠিক উত্তরটি বেছে নিতে হবে। স্বভাবতই, এ ক্ষেত্রে যে গ্যাসগুলি গ্রিনহাউস গ্যাস নয়, তাদের বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে কোনও ভূমিকা নেই, সেটি লিখতে হবে।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে পড়বে: মূল পাঠ্যপুস্তকটি ভাল ভাবে খুঁটিয়ে পড়তে হবে। কারণ, পাঠ্যপুস্তকের বাইরে থেকে কোনও প্রশ্ন পরীক্ষায় আসবে না।
প্রশ্নের কাঠামো: মাধ্যমিকের ভৌতবিজ্ঞান প্রশ্নপত্রে চারটি বিভাগ থাকবে। বিভাগ ‘ক’-তে থাকবে ১৫টি বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন বা এমসিকিউ। প্রতিটি প্রশ্নের চারটি করে বিকল্প উত্তর দেওয়া থাকবে। এর মধ্যে ঠিক উত্তরটি বেছে লিখতে হাবে। প্রতি প্রশ্নে থাকবে ১ নম্বর। এই অংশে মোট ১৫ নম্বর বরাদ্দ করা হবে। বিভাগ ‘খ’-তে ১ নম্বরের ২১টি প্রশ্ন থাকবে। কিছু প্রশ্নের ক্ষেত্রে বিকল্প প্রশ্নও দেওয়া থাকবে। এই অংশে মোট ২১ নম্বর থাকবে। বিভাগ ‘গ’-তে ২ নম্বরের ৯টি প্রশ্ন থাকবে। অর্থাৎ মোট নম্বর থাকবে ১৮। এ ক্ষেত্রেও কিছু প্রশ্নের বিকল্প প্রশ্ন থাকবে। বিভাগ ‘ঘ’-তে ৩ নম্বরের ১২টি প্রশ্ন থাকবে। কিছু প্রশ্নের আবার বিকল্প প্রশ্নও থাকবে। এই অংশে মোট নম্বর থাকবে ৩৬।
কী ভাবে উত্তর লিখবে: বিভাগ ‘ক’-এর উত্তর লেখার ক্ষেত্রে ১৫টি প্রশ্নের উত্তর পরপর লেখা ভাল। প্রতি প্রশ্নের চারটি বিকল্প উত্তরের মধ্যে যেটি সঠিক, সেটির দাগ নম্বর-সহ উত্তরটি লিখতে হবে। বিভাগ ‘খ’-এর উত্তর লেখার সময়েও পরপর সব প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। এই বিভাগের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর একটি শব্দে বা একটি বাক্যে লিখতে হবে। প্রশ্ন ভাল করে বুঝে নিয়ে উত্তর দিতে হবে। বিভাগ ‘ঘ’-এ কিছু কিছু প্রশ্নের একাধিক ভাগ থাকতে পারে। উত্তর লেখার সময়ে দু'টি উত্তরের মাঝে ব্যবধান রাখতে হবে। উল্লেখ্য, সমস্ত বিভাগের ক্ষেত্রেই কোনও প্রশ্ন উত্তরপত্রে লিখে তার উত্তর লেখা উচিত না। শুধুমাত্র উত্তরটিই লিখতে হবে।
শেষ কথা: জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক। তা-ও আবার অন্য স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে পরীক্ষার্থীদের। পরীক্ষা ছাড়াও এই নিয়ে কিছুটা ভয় বা মানসিক চাপ কাজ করে পড়ুয়াদের মধ্যে। তাদের জন্য পরামর্শ, যে স্কুলে পরীক্ষাকেন্দ্র পড়বে, সেখানেও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ থাকবে। অহেতুক ভয় পাওয়া উচিত নয়। এখন শুধু মনোযোগ দিয়ে বিষয়টি পড়া এবং লেখার অনুশীলন চালিয়ে যেতে হবে।
(লেখক নাকতলা হাই স্কুলের ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক)