E-Paper
BB_2025_Lead Zero Banner

ভিটে-মাটি ছাড়া

কঠিন পরিস্থিতি, ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির মাঝে এক নতুন আশঙ্কা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ঘরছাড়া প্যালেস্টাইনিদের— গাজ়া নিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব।

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৬:০৪
Share
Save

সপ্তাহ দুয়েক হতে চলল ইজ়রায়েল-হামাসের যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হওয়ার পর। এর মাঝে ঘরে ফেরার আশায় উত্তর গাজ়ায় ভিড় জমাচ্ছেন হাজার হাজার প্যালেস্টাইনি। যদিও স্কুল, ঘরবাড়ি, হাসপাতাল— যুদ্ধের জেরে ন্যূনতম পরিকাঠামোটুকুও আর নেই সেখানে। কঠিন পরিস্থিতি, ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির মাঝে এক নতুন আশঙ্কা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ঘরছাড়া প্যালেস্টাইনিদের— গাজ়া নিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব। পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ফেরাতে তাঁর অভিপ্রায় সম্প্রতি স্পষ্ট করলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প— যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়াকে ‘সাফ’ করতে তিনি সেখান থেকে সরিয়ে দিতে চান প্যালেস্টাইনিদের। তাঁদের পাঠাতে চান মিশর, জর্ডনের মতো পড়শি রাষ্ট্রগুলিতে। তাঁর দাবি, এই পুনর্বাসন হতে পারে সাময়িক বা দীর্ঘমেয়াদি। ফলে বাড়ছে উদ্বেগ— দুই রাষ্ট্র নীতির বিষয়ে আমেরিকার অবস্থানে কি তবে দাঁড়ি পড়তে চলেছে?

মানবাধিকার সংগঠনগুলি বহু কাল ধরেই ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে ‘এথনিক ক্লেনজ়িং’ বা জাতিগত নির্মূলকরণের অভিযোগ তুলে আসছে। এমতাবস্থায় আমেরিকান প্রেসিডেন্টের এ-হেন পরিকল্পনা শুধু ইজ়রায়েল-এর চরমপন্থীদের প্যালেস্টাইনিদের উৎখাতের ভাবনাকে পোক্ত করবে না, আগামী দিনে তাঁদের উপরে আরও তীব্র আঘাত হানার পথও প্রশস্ত করবে। সম্প্রতি তেল আভিভ-কে ২০০০ পাউন্ডের বোমা সরবরাহ করার চুক্তিতেও সায় দিয়েছেন ট্রাম্প। ১৯৪৮ সালে ও তার আগে প্রায় সাত লক্ষ প্যালেস্টাইনিকে আরব-ইজ়রায়েল যুদ্ধের জেরে এই অঞ্চল থেকে হয় পালাতে, নয়তো বিতাড়িত হতে হয়। কিন্তু ইজ়রায়েল গঠনের পরে তৎকালীন সরকার উদ্বাস্তুদের পুনরায় দেশে ফিরতে দেয়নি তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভয়ে। সেই উদ্বাস্তু এবং তাঁদের উত্তরসূরিরাই আজ ছড়িয়ে রয়েছেন গাজ়া, ইজ়রায়েল অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক, জর্ডন, লেবানন এবং সিরিয়ায়। প্যালেস্টাইনিদের তাই আশঙ্কা, এখন গাজ়া ছাড়লে, আর কোনও দিনই সেখানে ফেরা হবে না। অন্য দিকে, পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকার ঘনিষ্ঠসহযোগী হওয়া সত্ত্বেও মুখ্যত প্যালেস্টাইনিদের প্রতি সমর্থন এবং জাতীয় নিরাপত্তার কারণে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে মিশর এবং জর্ডন। দুই রাষ্ট্রনেতাই বিলক্ষণ জানেন, উদ্বাস্তু প্রবাহের জেরে তাঁদের রাষ্ট্র পরবর্তী কালে ইজ়রায়েল-এর বিরুদ্ধে জঙ্গি-কার্যকলাপের মঞ্চে পরিণত হবে। উনিশশো সত্তরের দশকের লেবানন-ইজ়রায়েলের সেই ভয়ানক সংঘাতের পুনরাবৃত্তি চান না তাঁরা।

প্রাথমিক ভাবে নাকচ করলেও, দুর্বল অর্থনীতি এবং আমেরিকার অনুদানের উপরে নির্ভরতার জেরে আগামী দিনে মিশর ও জর্ডনকে যে ট্রাম্পের প্রস্তাবে সায় দিতে হতে পারে— সে আশঙ্কা থাকছেই। তবে ট্রাম্প তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে, আগামী দিনে এই অঞ্চলের প্যালেস্টাইন-পন্থী মিত্র রাষ্ট্রগুলির থেকে আমেরিকার বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বিশেষত, পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকার অন্যতম উদ্যোগ— ইজ়রায়েল-সৌদি আরব সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা বিপন্ন হতে পারে। ট্রাম্পের আগমনে পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি তো বটেই, ভূরাজনৈতিক সমীকরণ আরও জটিল ও প্যালেস্টাইনিদের দুরবস্থা আরও দীর্ঘায়িত হতে চলেছে বটে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Donald Trump Gaza war

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।