E-Paper

লঙ্কাকাণ্ড

জেভিপি ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কার সংবিধানের ১৩তম সংশোধনের বিরোধিতা করেছে, যাতে তামিল সংখ্যালঘুদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছিল।

Sourced by the ABP

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:২৪
Share
Save

পালাবদল হল শ্রীলঙ্কায়। দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এই প্রথম জনসাধারণ প্রেসিডেন্ট হিসাবে বেছে নিলেন এক জন ‘বহিরাগত’-কে, যাঁর বামপন্থী (মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট) দল জনতা বিমুক্তি পেরামুনা (জেভিপি) এক সময় দেশে সহিংস অভ্যুত্থান চালিয়েছিল। সময়ের সঙ্গে যদিও বিবিধ সামাজিক-গণতান্ত্রিক বিষয়ে প্রাধান্য দেওয়ার মাধ্যমে রাজনীতির মূলধারায় ঢুকে পড়েছে তারা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, দলের এই রূপান্তরের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট অনুরাকুমার দিশানায়েকে-র। শুধু তা-ই নয়, মুদ্রাস্ফীতি, মূল্যবৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক অব্যবস্থার জেরে শ্রীলঙ্কায় যে জনপ্রিয় ‘আরাগালয়’ বিদ্রোহের জন্ম হয়, তার অন্যতম মুখ্য চরিত্রও ছিলেন তিনি। লক্ষণীয়, এই অভ্যুত্থানের জেরেই শেষ পর্যন্ত পতন ঘটে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের। এ দিকে, তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) নামের বাম জোটের হয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে-র তুলনায় দিশানায়েকে-র বড় ব্যবধানে জয় স্পষ্ট করে দিয়েছে, দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের বিষয়ে কতখানি ব্যাকুল ছিলেন জনসাধারণ।

অন্য দিকে, শ্রীলঙ্কার মাটিতে এপিপি জোটের জয়, যার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল জেভিপি, ভারতের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল না, যে-হেতু বহুকাল ধরেই সে দেশের ক্ষমতাবিরোধী মনোভাবের বিষয়টি আঁচ করতে পারছিল সে। যদিও দিল্লি বিলক্ষণ জানে যে, কলম্বোর এই সাম্প্রতিক পটপরিবর্তন আগামী দিনে তাদের বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে। তা ছাড়া, জেভিপি ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কার সংবিধানের ১৩তম সংশোধনের বিরোধিতা করেছে, যাতে তামিল সংখ্যালঘুদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছিল। তবে দিল্লি কিছুটা নিশ্চিন্ত হতে পারে এই ভেবে যে মলদ্বীপে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে মহম্মদ মুইজ়জ়ু যে ভাবে ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচার চালিয়েছিলেন, তেমন ভারত-বিরোধিতা কিন্তু দিশানায়েকের প্রচারে পরিলক্ষিত হয়নি। বরং সম্প্রতি তাঁর মুখে ভারতের সঙ্গে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার কথাই শোনা গিয়েছে। তা ছাড়া, গত ফেব্রুয়ারিতে দিশানায়েকে ভারতে আসেন এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল-এর সঙ্গে দেখা করেন। দ্বীপরাষ্ট্রটির ঋণখেলাপি অবস্থা পুরোপুরি কাটেনি। এই অবস্থায় নতুন ঋণের জন্য ভারতের সাহায্য প্রয়োজন হবে।

তবে নিজ ভূমে দিশানায়েকের চ্যালেঞ্জও কম নয়। তাঁর নির্বাচনী প্রচারের মুখ্য বিষয় থেকেছে দুর্নীতি দমন-সহ সামাজিক উন্নয়নের মতো বিবিধ বিষয়। দেশের রাজনীতি তথা অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার পাশাপাশি তাঁর অন্যতম চ্যালেঞ্জ হল দেশের এক-চতুর্থাংশ মানুষকে দারিদ্রসীমার উপরে তুলে আনা। খাদ্য এবং জ্বালানি সঙ্কটের স্মৃতি এখন মুছে যায়নি জনসাধারণের মন থেকে। শুধু তা-ই নয়, বেজিং-মনোভাবাপন্ন হলেও তিনি চিনের বিরুদ্ধে জনসাধারণের উষ্মার কথা বিলক্ষণ জানেন। প্রসঙ্গত, সে দেশের বহু মানুষ মনে করেন চিনের ‘লুণ্ঠনকারী নীতি’ই দেশের অর্থনীতিকে ঋণের জালে ঠেলে দিয়েছে। ফলে যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন, তা খেলাপ করা চলবে না। ভিতরের ও বাইরের চাপ তিনি কী করে সামলান, সেটাই এখন দেখার।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Sri Lanka

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।