লোকসভা ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদীর অভিযোগ ছিল, কংগ্রেস আর্থ-সামাজিক সমীক্ষা চালিয়ে মহিলাদের মঙ্গলসূত্র ছিনিয়েনিতে চাইছে। তবে সরকারি তথ্য বলছে, মোদী জমানায় মহিলাদের সোনা বন্ধক রেখে ধার করতে হচ্ছে।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছিল, গত অর্থবর্ষে সোনা বন্ধক রেখে ঋণ ১.০২ লক্ষ কোটি টাকা ছুঁয়েছে। পাঁচ বছর আগে (২০১৮-১৯) ছিল ২৫,০০০ কোটি। এ বার নীতি আয়োগের রিপোর্টেও দাবি, মহিলারা ২০২৪-এ যতটা ধার করেছেন, তার ৩৮ শতাংশই সোনা বন্ধক রেখে নেওয়া। পাঁচ বছরে তা বেড়েছে ২২%। কংগ্রেসের অভিযোগ, এতে স্পষ্ট গৃহস্থ পরিবার আর্থিক সঙ্কট ও ঋণের ভারে ডুবে। তাই ঘরের সোনা বার করতে হচ্ছে। সঙ্কটের কারণ, রোজগার কমা। যা ক্রয়ক্ষমতা কমাচ্ছে। ফলে বাজারে চাহিদা নেই। কমছে কারখানায় উৎপাদন।
ফেব্রুয়ারিতে দেশে উৎপাদনের সূচক ১৪ মাসের সর্বনিম্ন হয়েছে। আজ মোদীও মেনেছেন উৎপাদনে মন্দার বিষয়টি। বাজেট এবং ছোট-মাঝারি শিল্প নিয়ে এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে শিল্পমহলকে উৎপাদন ও রফতানিতে এগিয়ে আসার ডাক দিয়েছেন। বলেছেন, শিল্পকে নীরব দর্শক হয়ে থাকলে চলবে না। ভারতে স্থিতিশীল নীতি ও ব্যবসার সহজ পরিবেশ আছে। বিশ্ব বাজারে জোগানের সুযোগও নিতে হবে। পরিসংখ্যান মন্ত্রক সম্প্রতি জানিয়েছে, অক্টোবর-ডিসেম্বরে দেশের অর্থনীতির কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত মিলেছে। তবে শিল্প উৎপাদন বাড়াতে বা নতুন লগ্নিতে উৎসাহী নয়। তাই চিন্তা বহাল। উৎসবের মরসুমেও কারখানায় উৎপাদন বেড়েছে সামান্য।
কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘ভারতের অর্থনীতি মোদীর তৈরি সঙ্কটে ডুবেছে। ২০২৪-এ অর্থনীতির শ্লথ গতির ফলে পাঁচ বছরে স্বর্ণঋণ ৩০০% বেড়েছিল। তা প্রথমবার ১ লক্ষ কোটি টাকা পেরোয়। খারাপ খবর হল, ফেব্রুয়ারিতে আরবিআই জানিয়েছে, বাড়ি-গাড়ি ঋণ বৃদ্ধির হার কমেছে। কিন্তু বিপদে পড়ে সোনা বন্ধক রেখে ধার বাড়ছে। ওই ঋণ ৭১.৩% বেড়েছে। নীতি আয়োগের রিপোর্টেও দাবি, ২০২৪-এ মহিলাদের মোট ঋণের প্রায় ৪০% স্বর্ণঋণ। মোদী সরকারের ভুল নীতিই এর জন্য দায়ী।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)