শুল্ক যুদ্ধ কবে শেষ হবে তা স্পষ্ট নয়। সেই সঙ্গে ডলারের নিরিখে টাকা ধারাবাহিক ভাবে শক্তি হারানোয়, ভারতীয় শেয়ার বাজারের প্রতি বিদেশি লগ্নিকারীরা উৎসাহ হারাচ্ছেন। এই সমস্ত কিছুর মিলিত প্রভাবে এ দেশের বাজার থেকে তাদের পুঁজি প্রত্যাহার মার্চেও অব্যাহত। বাজার সূত্রের খবর, এ মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে (১৩ মার্চ পর্যন্ত) নিট হিসাবে ৩০,০১৫ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে তারা। এর আগে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ভারতের বাজার থেকে যথাক্রমে ৭৮,০২৭ কোটি এবং ৩৪,৫৭৪ কোটি টাকার পুঁজি সরিয়ে নিয়েছিল। ফলে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত মোট ১.৪২ লক্ষ কোটি তুলল তারা। নিট হিসাবে টানা ১৪ সপ্তাহ ধরে চলল পুঁজি প্রত্যাহার।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এর পিছনে আন্তর্জাতিকের পাশাপাশি, জাতীয় অর্থনীতি সংক্রান্ত কারণও রয়েছে। মর্নিংস্টার ইনভেস্টমেন্টের কর্তা হিমাংশু শ্রীবাস্তবের ব্যাখ্যা, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি সারা বিশ্বেই বাণিজ্য-মন্দার আশঙ্কা তৈরি করেছে। যে কারণে ভারতের মতো উন্নয়নশীল বাজারে পুঁজি ঢালার আগে সতর্ক পদক্ষেপ করতে চাইছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। তার উপরে ডলারের নিরিখে ভারতীয় মুদ্রার দাম কমায় তাদের রিটার্নও আকর্ষণ হারাচ্ছে। একই সঙ্গে আমেরিকায় ঋণপত্রের প্রকৃত আয় বা ইল্ড বৃদ্ধি পাওয়া এবং ডলার শক্তিশালী হওয়ায় সে দেশের সম্পদগুলিও লগ্নিকারীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। ফলে ভারত থেকে সরে যাওয়া পুঁজির একটা বড় অংশ ফিরে যাচ্ছে আমেরিকায়।
জিয়োজিৎ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের আধিকারিক ভি কে বিজয়কুমার জানান, ২০২৫ সালে অন্যান্য দেশের তুলনায় চিনের শেয়ার বাজারের অগ্রগতি ভাল। ভারত থেকে সরে যাওয়া পুঁজির অন্য একটি অংশ পাড়ি জমাচ্ছে সে দেশেও।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)