নতুন বছর পুরো দু’মাস পেরোয়নি। তার আগেই ভারতের শেয়ার বাজার ছেড়ে গেল ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বিদেশি লগ্নি। শুধু ফেব্রুয়ারিতেই (২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) সংস্থাগুলি এ দেশে ২৩,৭১০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। এই সময়ে তারা পুঁজি তুলেছে ঋণপত্রের বাজার থেকেও।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের পণ্যে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমদানি শুল্ক বসানোর হুমকি অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। চিনা পণ্যে এবং ইস্পাত-অ্যালুমিনিয়ামে তা বসেওছে। সর্বত্র চেপে বসা বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কাই ভারতের মতো উন্নয়নশীল অর্থনীতি সম্পর্কে আস্থা কমাচ্ছে বিদেশি লগ্নিকারীদের। তবে একাংশের ধারণা, দেশে ঝিমিয়ে পড়া আর্থিক বৃদ্ধির হার মাথা তুললে এবং কর্পোরেট সংস্থাগুলির ঢিমে হওয়া আর্থিক ফলে উন্নতি দেখা গেলে কয়েক মাসের মধ্যে ফিরে আসতে পারে তারা।
গত মাসে তারা ভারতে বেচেছিল ৭৮,০২৭ কোটি টাকার শেয়ার। যার হাত ধরে এখনও পর্যন্ত এ বছরে তাদের শেয়ার বিক্রির পরিমাণ ১,০১,৭৩৭ লক্ষ কোটি টাকা ছুঁয়েছে। ডিসেম্বরে অবশ্য কিনেছিল ১৫,৪৪৬ কোটি টাকার। তবে ২০২৪ সালে দেশের শেয়ার বাজারে বিদেশি লগ্নি থমকেছে ৪২৭ কোটিতে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, শুল্ক যুদ্ধের পাশাপাশি বিদেশি লগ্নিকারীদের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে ডলারের সাপেক্ষে টাকার দামের তলিয়ে যাওয়াও। অক্টোবর-ডিসেম্বরে এ দেশের কর্পোরেট সংস্থাগুলির আর্থিক ফল তেমন ভাল হয়নি। বাজারে চাহিদার অভাবে শিল্পোৎপাদন এখনও ঝিমিয়ে। উল্টো দিকে চিনের সরকার আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি আনতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। বিশ্ব বাজারে চাঙ্গা ডলার সূচক। ফলে ডলার, চিন, এমনকি সুরক্ষিত লগ্নির গন্তব্য হিসেবে সোনাতেও সরে যাচ্ছে বিদেশি লগ্নি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)