—প্রতীকী চিত্র।
জলপাইগুড়ি: দু’মাস ছায়া জোটেনি। বৃষ্টির নামগন্ধ নেই। খসে পড়ছে চা পাতা। ধরছে না কুঁড়িও। উত্তরবঙ্গের ডেঙুয়াঝাড়ে সবুজ পাতায় পোড়া দাগের ছাপ স্পষ্ট। প্রায় তিন দশক ধরে জলপাইগুড়ি লাগোয়া এই বাগানে পাতা তোলার কাজে যুক্ত সুমিত্রা ওঁরাও বলছেন, ‘‘পাতা আপনা-আপনি ঝরে যাচ্ছে, আগে এমন দেখিনি!’’ শিল্পের দাবি, টানা রোদে ডুয়ার্স, তরাইয়ে উৎপাদন কমেছে। বৃষ্টি না হলে জুলাইয়ে আরও ক্ষতি হবে। ফলে দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’ চায়ের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। লোকসানের আশঙ্কায় প্রমাদ গুনছে গোটা চা মহল।
প্রথম ‘ফ্লাশ’ চা পাতার তুলনায় দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’ কদরে খুব পিছিয়ে নেই। এর মূল আকর্ষণ ঘন ‘লিকার’ এবং স্বাদ। কিন্তু তেতেপুড়ে যাওয়া পাতায় স্বাদ উধাও হওয়ার আশঙ্কা। বুধবার নাগরাকাটার টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে বার্ষিক আলোচনায় প্রায় সব বাগানের ম্যানেজারেরাই জানান, মূলত চড়া রোদ, অনাবৃষ্টি এবং রোগ-পোকার আক্রমণে চায়ের উৎপাদন কমছে।
দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’ উৎপাদনের চাবিকাঠি ঝলমলে রোদ, বিকেলের পরে বৃষ্টি। কিন্তু মে মাস থেকে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় কার্যত দাবদাহ চলছে। আবহাওয়া দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেখানে মে মাসে অন্তত ১২ দিন বৃষ্টি হয়, জুনে অন্তত ১৭ দিন। কিন্তু গত দু’মাসে ঘাটতি ৮০ শতাংশেরও বেশি। ফলে চা গাছ ‘রস’ পায়নি। রোদ-গরমে ‘লুপার’ এবং লাল মাকড়ের মতো রোগ-পোকার আক্রমণ বেড়েছে। কীটনাশকেও কাজ হচ্ছে না।
টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার হিসাব, তরাইয়ে ৩০-৩৫ শতাংশ এবং ডুয়ার্সে ৩৮% দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’ চায়ে ক্ষতি হয়েছে। সংগঠনের চেয়ারম্যান নয়নতারা পালচৌধুরী বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়। পরিস্থিতি মোকাবিলার পথ খুঁজতে গবেষণা জরুরি।’’ ছোট বাগানের পাতা কিনে চা তৈরি করে বটলিফ কারখানা। সেগুলিতে তালা ঝুলেছে। কারণ, পাতা নেই। ছোট চা বাগানের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তীর আক্ষেপ, ‘‘বাড়তি জলসেচেও পাতা বাঁচানো যাচ্ছে না। বৃষ্টির বিকল্প কি সেচে হয়!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy