সমস্ত দেশের উপরে শুল্ক নিয়ে নিজের সিদ্ধান্তে স্থির আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তা-ই নয়। এক ধাপ এগিয়ে সোমবার চিনের উপরে আরও বেশি হারে শুল্ক বসানোর হুমকিও দিয়েছেন তিনি। গত বুধবার চিনা পণ্য আমদানিতে ৩৪% শুল্ক চাপানোর পাল্টা হিসেবে শুক্রবার বেজিং একই হারে আমেরিকার পণ্যে শুল্ক বসানোর কথা জানিয়েছিল। আজ নিজের সমাজমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি, মঙ্গলবারের মধ্যে সেই সিদ্ধান্ত না ফেরানো হলে বেজিং-এর উপরে আরও ৫০% শুল্ক বসাবে তাঁর প্রশাসন। সব মিলিয়ে চিনা পণ্যে তার হার দাঁড়াবে ১০৪%। পাশাপাশি, চিনের সঙ্গে সব বৈঠকে বসার আর্জিও খারিজ করা হবে। তবে অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা চলবে বলে দাবি তাঁর।
গত বুধবার ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের উপরে ন্যূনতম ১০% আমদানি শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। পাশাপাশি বিভিন্ন হারে বাড়তি শুল্ক। ভারতের ঘাড়ে যেমন ২৬%। ওই সিদ্ধান্তের ধাক্কায়ই সোমবার বিশ্ব জুড়ে ধস নেমেছে শেয়ার বাজারে। কারণ, মন্দার আশঙ্কা চেপে বসেছে সর্বত্র। ব্যতিক্রম নয় আমেরিকাও। আজ সেখানে বাজার খোলার পরে পেন্ডুলামের মতো দুলছে সূচক। প্রথমে ১৭০০ পয়েন্টের বেশি নেমে যায় ডাও জোন্স। তার পরে ৯০ দিন শুল্ক স্থগিত রাখার জল্পনায় তা আগের দিনের থেকে ওঠেও। হোয়াইট হাউস তা খারিজ করায় সূচক ফের পড়ে যায় ৯০০ পয়েন্টের বেশি। আর চিনের উপরে বাড়তি শুল্কের হুমকির ফলে তা এ পর্যন্ত আর মাথা তোলেনি।
এই অবস্থায় বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠছে সিদ্ধান্ত ফিরে দেখার। যদিও দেশবাসীর প্রতি ট্রাম্পের বার্তা, ‘‘শক্ত থাকুন, ভয় পাবেন না। ধৈর্য ধরুন এবং
সেরার শিরোপা আমরাই পাব।’’ আর তাঁর প্রশাসনের বিভিন্ন কর্তার দাবি, শুল্ক ঘোষণার পরে ৫০টিরও বেশি দেশ বাণিজ্য চুক্তির জন্য তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল বলছে, দেশগুলিও দিশেহারা। আলোচনার রাস্তায় হাঁটা হবে নাকি পাল্টা শুল্ক বা অন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা ঠিক করতে ব্যস্ত তারা। তবে সহজে যে সেই আলোচনা হওয়ার নয়, তা মেনেছেন আমেরিকার ট্রেজ়ারি সচিব স্কট বেসেন্ট।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)