শেয়ার বাজারের টানা পতনে সন্ত্রস্ত লগ্নিকারীরা। সোমবার বিরোধীদের অভিযোগ, বাজারের অনিশ্চয়তা এবং বহু মানুষের হাতে বাড়তি পুঁজির অভাব পড়ছে বিনিয়োগেও। যে কারণে জানুয়ারিতে দেশে যতগুলি এসআইপি (সিস্টেমেটিক ইভেস্টমেন্ট প্ল্যান) খোলা হয়েছে, তার থেকে বেশি বন্ধ হয়েছে। তার মানে, এই লগ্নি থেকে সরেছেন একাংশ। এ জন্য মোদী সরকারকে দায়ী করে কংগ্রেসের বক্তব্য, এই ঘটনা দেশের আর্থিক ব্যবস্থার পক্ষে খারাপ। তা গোটা ফান্ড শিল্পকে সমস্যায় ফেলতে পারে। এসআইপি হল অল্প অল্প করে ফান্ডে নিয়মিত লগ্নির পদ্ধতি।
ফান্ড শিল্পের সংগঠন অ্যাম্ফি-র হিসাব, গত মাসে ভারতে খোলা হয়েছে ৫৬.১৯ লক্ষ এসআইপি। বন্ধ হয়েছে ৬১.৩৩ লক্ষ। এক্স-এ কংগ্রেসের দাবি, এতেই প্রমাণ হয় বাজার নিয়ে মানুষ আতঙ্কিত। সরকারের নীতিতেও আস্থা নেই। তার উপরে অনেকের হাতে লগ্নি টানার মতো টাকা নেই। তাদের অভিযোগ, ‘‘সাধারণ লগ্নিকারীদের লোকসান হলেও মোদী সরকার ভ্রুক্ষেপহীন। এতেই স্পষ্ট তারা আর্থিক ব্যবস্থা সামলাতে পুরোপুরি ব্যর্থ।’’
লগ্নি বিশেষজ্ঞ নীলাঞ্জন দে বলেন, ‘‘বাজার আরও পড়বে এবং অস্থিরতা খুব বেশি— এই আশঙ্কা থেকেই এসআইপি বন্ধ করেছেন অনেকে। কারণ লগ্নি-মূল্য কমেছে। বাজার চাঙ্গা না হলে তাঁরা এখানে আর টাকা ঢালতে নারাজ।’’ তাঁর মতে, এসআইপি-র সুবিধা হল অল্প অল্প করে বড় সঞ্চয় গড়া যায়। জীবনযাপনের খরচ বাড়লেও অনেকে কষ্ট করে এই লগ্নি বহাল রেখেছিলেন। বিপুল রিটার্ন তাঁদের উৎসাহিত করছিল। এখন রিটার্ন কমতে থাকায় তাঁরা সরে যাচ্ছেন। বিশেষত নতুন লগ্নিকারীরা কিংবা যাঁরা সম্প্রতি এসআইপি-র পরিমাণ বাড়িয়েছেন। নীলাঞ্জনের কথায়, ‘‘সকলকে বোঝানো দরকার পড়তি বাজারই এসআইপি শুরুর সময়। কম দামে বেশি ইউনিট মেলে।’’
বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশেরও দাবি, তরুণ প্রজন্মের বড় অংশ এসআইপি শুরু করেছেন। তাঁরা এই প্রথম সূচককে এত পড়তে দেখে এসআইপি বন্ধ করে দিচ্ছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)