Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Supreme Court

সুদের উপরে সুদ আসলে শাস্তি, যুক্তি সুপ্রিম কোর্টে

করোনার আবহে সাধারণ মানুষ ও শিল্পকে সুরাহা দিতে অগস্ট পর্যন্ত ছ’মাস ঋণে মোরাটোরিয়াম প্রকল্প আনে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্ট।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:৪৫
Share: Save:

ঋণের কিস্তি স্থগিত থাকার (মোরাটোরিয়াম) সময়েও যদি বকেয়ার উপরে সুদ অথবা সুদের উপরে সুদ নেওয়া হয়, তা হলে সেটা ঋণগ্রহীতাকে শাস্তি দেওয়ার সমান বলে সুপ্রিম কোর্টে দাবি করলেন আবেদনকারীরা। ওই সময় সুদ বসানোতেই আপত্তি জানিয়েছেন তাঁরা। দাবি করেছেন, এই প্রকল্প ঋণগ্রহীতাকে সুরাহা দিতে আনা। ফলে তাতে নাম লেখানো মানে ঋণ খেলাপ নয়। অথচ সে ভাবেই তাঁদের দেখা হচ্ছে। শাস্তি হিসেবে চাপানো হচ্ছে সুদ। কেন্দ্রের অবশ্য দাবি, সুদ মকুব হলে আর্থিক অনুশাসন ভাঙবে।

করোনার আবহে সাধারণ মানুষ ও শিল্পকে সুরাহা দিতে অগস্ট পর্যন্ত ছ’মাস ঋণে মোরাটোরিয়াম প্রকল্প আনে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বলা হয়, ওই সময়ের বকেয়া ইএমআই পরে মেটাতে হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির বক্তব্য, বকেয়া সুদের উপরেও দিতে হবে সুদ। ফলে দেখা যাচ্ছে, এতে খরচ হবে অনেক বেশি। তার পরেই আদালতে যান ঋণগ্রহীতাদের একাংশ।

সুপ্রিম কোর্টে তাঁদেরই এক জনের আইনজীবীর বক্তব্য, তাঁর মক্কেলের ধারণা ছিল পরে বকেয়া কিস্তি মেটালেই চলবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বাড়তি সুদ দিতে হবে। এটা তো একপ্রকার শাস্তি। তাঁর অভিযোগ, করোনার সময়ে এ ভাবে ব্যাঙ্ক-সহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি সুবিধা লুটছে। ভুগছেন মানুষ। ঋণ পুনর্গঠনের প্রকল্পে যেন মানুষ সমস্যায় না-পড়েন, সেই আর্জিও জানানো হয়েছে।

কেন্দ্র অবশ্য সুদ মকুবে নারাজ। তবে তারা বলেছে, করোনায় সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা ব্যক্তির কতটা ক্ষতি হয়েছে তার নিরিখে মোরাটোরিয়াম দু’বছর পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। এমন প্রকল্প তৈরিও করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

আজ শীর্ষ আদালতে মোরাটোরিয়াম আরও ছ’মাস বাড়ানোর দাবি করেছে আবাসন শিল্পের সংগঠন ক্রেডাই। বলেছে, সুদ পুরো মকুব না-হলে অন্তত তার হার কমিয়ে আমানতের সমান করা হোক। এ নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে এগোনোর কথা বলেছে কেন্দ্র।

এক ঝলকে

ব্যাঙ্ক ঋণের কিস্তি স্থগিতের (মোরাটোরিয়াম) সুবিধা ফুরিয়েছে ৩১ অগস্ট।
জমে যাওয়া ইএমআইয়ের উপরে ব্যাঙ্কগুলির সুদ ও সুদের উপর সুদ চাপানো নিয়ে ঋণগ্রহীতাদের তরফে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে।
কেন্দ্র ও আরবিআইয়ের তরফে সলিসিটর
জেনারেল মঙ্গলবারই হলফনামায় সুদ ও সুদের উপর সুদ নেওয়ার পক্ষে মত দিয়ে বলেছিলেন, এটা না-নিলে আর্থিক অনুশাসন ভাঙবে এবং সময়ে ধার মেটানোদের প্রতি অবিচার করা হবে।

তার পরেই বুধবার সুদ মকুবের একগুচ্ছ আবেদন শুনল সুপ্রিম কোর্ট।
আজ, বৃহস্পতিবার শুনানি।

আবেদনকারীর অভিযোগ

• ছ’মাস স্থগিত থাকা ইএমআইয়ে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বসার কথা বলা হয়েছে। যার মানে সুদের উপরে সুদ বসবে। এটা তো ঋণগ্রহীতাদের উপরে জোড়া ধাক্কা।
•সুদের উপর সুদ বসিয়ে ব্যাঙ্কগুলি মোরাটোরিয়ামের সুবিধাকে ঋণ খেলাপ হিসেবে গণ্য করছে।
• ঋণ পুনর্গঠনের পূর্ণ স্বাধীনতা আছে ব্যাঙ্কের, কিন্তু সুদ নিয়ে সৎ ঋণগ্রহীতাদের শাস্তি দিতে পারে না তারা। কিস্তি স্থগিত প্রকল্পে নাম লেখানোর অর্থ ঋণ খেলাপ নয়।
• এই করোনা-সঙ্কটের সময়ে ব্যাঙ্কগুলি ঋণগ্রহীতাদের সুবিধা দেওয়ার বদলে নিজেরাই সুযোগ নিচ্ছে।
n প্রকৃত অর্থে করোনার সময় ব্যাঙ্কগুলিকে সুরাহা দেওয়া হল, ঋণগ্রহীতাদের নয়। অথচ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তো ব্যাঙ্কগুলির এজেন্ট নয়, তাদের নিয়ন্ত্রক।

অন্য বিষয়গুলি:

Supreme Court Borrower Bank
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy