DYFI Brigade Rally

ব্রিগেডের আগের বিকেলে ময়দানে দমদম জোড়া খুনের দুলাল, সিপিএম কি দরজা খুলবে এই জানুয়ারিতেই?

গত এপ্রিলে প্রথম জানাজানি হয়, দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় সিপিএমের দলীয় সদস্যপদ ফিরে পেতে চেয়ে আলিমুদ্দিনে আর্জি জানিয়েছেন। যার প্রতিক্রিয়ায় রাজ্য সম্পাদক সেলিম ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:২৫
Will the CPM state committee approve Dum Dum\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s Dulal Banerjee to return to the party this month

দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

দমদমে জোড়া খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ১২ বছর জেল খেটেছিলেন কাশীপুর-বেলগাছিয়া এলাকার সিপিএম নেতা দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছর এপ্রিল মাসে তিনি রাজ্য কমিটির কাছে চিঠি লিখে দলের সদস্যপদ ফিরে পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। রবিবার বাম যুবদের ব্রিগেড সমাবেশের আগের দিন শনিবার বিকেলে নির্মীয়মাণ মঞ্চের পিছনে সেই দুলালকে ঘিরে যা চলল, তা দেখে অনেকেই মনে করছেন তাঁর জন্য শীঘ্রই দলের দরজা খুলে দিতে পারে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।

Advertisement

শনিবার বিকেলে ব্রিগেডের প্রস্তুতি দেখতে এসেছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম-সহ দলের অন্য অনেক নেতা। দুলালের সঙ্গে দমদম এলাকার সিপিএম কর্মীদের জটলা ছিল। কিন্তু উল্লেখযোগ্য ভাবে দেখা যায়, সেলিম-সহ অনেক নেতাই দুলালের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলছেন। এ-ও দেখা যায়, জটলা থেকে কিছুটা পাশে সরে গিয়ে সেলিমের সঙ্গে কথা বলছেন দুলাল। দু’জনের মধ্যে কী কথা হয়েছে, তা বিশদে শোনা না গেলেও সেলিমের একটি বক্তব্য স্পষ্ট শুনেছেন অনেকে। তা হল, ‘‘দিস মান্থ! দিস মান্থ!’’ তার পরেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে, তা হলে কি এই মাসেই রাজ্য কমিটি দুলালকে দলীয় সদস্যপদ ফিরিয়ে দেবে? কলকাতা জেলার এক সিপিএম নেতার কথায় অবশ্য, ‘‘যা করার রাজ্য কমিটিই করবে। এখানে জেলার কোনও বিষয় নেই।’’

গত এপ্রিলে প্রথম জানাজানি হয়, দুলাল সিপিএমের দলীয় সদস্যপদ ফিরে পেতে চেয়ে আলিমুদ্দিনে আর্জি জানিয়েছেন। সেই সময়ে সেলিম বলেছিলেন, ‘‘আমরা তো আগেই বলেছি, যাঁরা দূরে সরে গিয়েছেন, তাঁদের আমরা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব। আর যিনি বলছেন মানসিক ভাবে পার্টির সঙ্গে আছেন, তিনি তো আছেনই।’’ প্রসঙ্গত, দুলাল জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর অন্য কোনও দলে যাননি। সিপিএমই করে গিয়েছেন। গত বছর ১ মে দমদমের সেভেন ট্যাঙ্কস রোডে সিপিএমের একটি ‘দখল’ হয়ে যাওয়া পার্টি অফিস খুলতে গিয়ে তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে সংঘাতে হাত ভেঙেছিল সত্তরোর্ধ্ব এই নেতার।

২০০২ সালের এপ্রিলের গোড়ায় দমদমে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছিল। নাম জড়িয়েছিল তৎকালীন কাশীপুর-বেলগাছিয়া জোনাল কমিটির সদস্য দুলালের। তাঁকে যে দিন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পুলিশ গ্রেফতার করতে গিয়েছিল, সে দিন পুলিশের রাস্তা আটকে দিয়েছিলেন অধুনাপ্রয়াত সে কালের দাপুটে নেতা রাজদেও গোয়ালা। দলের মধ্যে অনেকেই বলেন, বুদ্ধদেব সে দিন না চাইলে দুলাল গ্রেফতার হতেন না। অনেকে এ-ও বলেন, পার্টির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বই দুলালকে ১২ বছর জেল খাটিয়েছে। উল্লেখ্য, দুলাল যখন গ্রেফতার হয়েছিলেন, তখন ভরা বামজমানা। ২০১৪ সালে যখন তিনি জেল থেকে ছাড়া পান, তখন বামেদের রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের রমরমা বাড়ছে।

সিপিএমের যুব সংগঠনের ইনসাফ যাত্রায় লালগড়ে দেখা গিয়েছিল অনুজ পাণ্ডে, ডালিম পাণ্ডে, ফুল্লরা মণ্ডলেরা হাঁটছেন। সেই সময়ই রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছিল, সিপিএম কি তা হলে ‘হার্মাদ লাইনে’ ফিরতে চাইছে? প্রসঙ্গত, ওই তিন জনই নেতাই গণহত্যা মামলায় ১২ বছর জেল খেটেছেন। রবিবার ঘটনাচক্রে, সেই নেতাই গণহত্যারই বর্ষপূর্তি। শনিবার ব্রিগেড ময়দানে দমদমের দুলালকে ঘিরে যে সব ফ্রেমের ‘কোলাজ’ তৈরি হল, তাতে সেই ‘হার্মাদ লাইন’ সংক্রান্ত কৌতূহল আরও জোরদার হয়েছে। প্রসঙ্গত, কঙ্কালকাণ্ডে জেল খেটে আসা প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষকে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক করেছে সিপিএম। যে সম্মেলনে সম্পাদক নির্বাচনে ভোটাভুটি পর্যন্ত হয়েছিল। সূর্যকান্ত মিশ্রের ‘প্রিয়পাত্র’ হিসেবে পরিচিত তাপস সিংহকে হারিয়ে সম্পাদক হন সুশান্ত। দলশ্রুতি: সুশান্তের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন স্বয়ং সেলিম। তবে তখনও তিনি রাজ্য সম্পাদক হননি।

Advertisement
আরও পড়ুন