‘চালচিত্র’ ছবির একটি দৃশ্যে (বাঁ দিকে) টোটা রায়চৌধুরী এবং রাইমা সেন। ছবি: সংগৃহীত।
বছরশেষে মুক্তি পেয়েছে চারটি বাংলা ছবি। এর মধ্যে থ্রিলার হিসেবে ‘চালচিত্র’ দর্শকের পছন্দ হয়েছে। কিন্তু তুলনায় কম শো পেয়েছে ছবিটি। শোয়ের নিরিখে ‘খাদান’-এর পরেই রয়েছে ‘সন্তান’। ছবিটির শো পাওয়া নিয়েও হতাশা ধরা পড়েছে পরিচালক প্রতিম ডি’গুপ্ত এবং প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসানের কণ্ঠে। ছবি মুক্তির পর তিন দিন অতিক্রান্ত। ‘চালচিত্র’-র শো কি আগামী দিনে বাড়বে?
প্রতিম মনে করেন, শোয়ের সংখ্যা বাড়লেই হল না, বরং ছবিকে দর্শকের কাছে পৌঁছে দিতে হলে সঠিক সময়ে (প্রাইম টাইম) শো পেতে হবে। তাঁর যুক্তি, ‘‘শীতের এই সময়ে দেখা গেল, দুটো শোয়ের একটা সকালে এবং একটা রাতে। দর্শক কি যেতে পারবেন? আমরা দুপুর দুটো থেকে সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে খুব কম শো পেয়েছি।’’
ফিরদৌসুল জানালেন, ‘চালচিত্র’ এ রাজ্যে কমবেশি ৩৫টি প্রেক্ষাগৃহে ৪০টির মতো শো পেয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে ভাল সময়ে শোয়ের সংখ্যা কম। বললেন, ‘‘আমরা জানতাম, শো কম পাব। কারণ অনেক ছবি একসঙ্গে মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু এখন তো দর্শকই বলছেন, ছবিটা ভাল হয়েছে। অনেক জায়গা থেকে শোয়ের অনুরোধও আসছে।’’
তাঁর ছবি যথেষ্ট শো পায়নি বলে, মনের মধ্যে একটা খারাপ লাগা কাজ করছে প্রতিমের। তবে তিনি যে শুরু থেকেই অন্যদের মতো কম শো পাওয়া নিয়ে গলা ফাটাতে চাননি, সে কথাও রবিবার সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে স্পষ্ট করেছিলেন প্রতিম। তাঁর কথায়, ‘‘আমি তো আঁতেল ছবি তৈরি করিনি। বিনোদনের মোড়কে একটা থ্রিলার। সকলেই দেখে প্রশংসা করছেন। জানি, অন্য দুটো ছবির মতো হয়তো হইহই করে মানুষ দেখছেন না। কিন্তু দর্শক আমার ছবিটা যদি দেখেন, আমি খুশি হব।’’ ‘মাল্টিস্টারার’ ছবি হওয়া সত্ত্বেও প্রতিম মনে করছেন, তাঁর ছবিতে কোনও বড় ‘তারকা’ নেই। কথা প্রসঙ্গেই দেবের প্রশংসায় শব্দ খরচ করলেন প্রতিম। বললেন, ‘‘এ কথা অনস্বীকার্য যে, বাংলায় এখন দেবের মতো বড় তারকা নেই। তাই সেই ছবিকে নিয়ে উন্মাদনা হওয়াটা স্বাভাবিক। আসলে ‘খাদান’-এর মতো ছবি সফল হলে আমাদের মতো পরিচালকেরাও তো তাঁদের ছবির জন্য আগামী দিনে বেশি বাজেট পাবেন। দেব যে ভাবে ‘খাদান’-ঝড় তুলেছে, আমি ওকে কুর্নিশ জানাচ্ছি।’’ তবে একই সঙ্গে প্রতিম নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জুটির উল্লেখ করলেন। তাঁর যুক্তি, ‘‘নির্মাতা হিসেবে ওঁদের কিন্তু একটা আলাদা দর্শক রয়েইছে। তাঁরা শিবুদা-নন্দিতাদির ছবি দেখতে যাবেনই।’’
আগামী বুধবার থেকে প্রেক্ষাগৃহে জায়গা পাবে বরুণ ধওয়ান অভিনীত হিন্দি ছবি ‘বেবি জন’। ফলে সামগ্রিক ভাবে বাংলা ছবির শো পাওয়া নিয়ে নতুন পরিকল্পনায় বসতে চলেছেন হলমালিকেরা। ‘চালচিত্র’-এর প্রযোজকের আশা, যে হেতু তাঁদের ছবিটি দর্শক দেখছেন, তাই দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শোয়ের সংখ্যা বাড়া উচিত। ফিরদৌসুলের যুক্তি, ‘‘আমার ছবি যদি পারফর্ম না করত, তা হলে কিছু বলতাম না। কিন্তু যে ভাবে একের পর এক শো দর্শক ভরিয়ে দিচ্ছেন, সেখানে আরও...।’’
প্রতিমও সেই আশাতেই বুক বেঁধেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘‘পুষ্পা ২’-এর টিকিট বিক্রি খানিক কমেছে। ‘মুফাসা’ও নাকি খুব ভাল করতে পারছে না। তাই একটু হলেও আমাদের আশা বাড়ছে। সামনে অনেকগুলো ছুটির দিন আসছে। আশা করছি, দর্শক একটু কষ্ট করে হলেও তাঁদের সুবিধা মতো সময়ে আমাদের ছবিটা দেখতে আসবেন।’’