বাণিজ্যিক পরিবহণে প্রযুক্তি নিয়ে প্রশ্ন। ফাইল চিত্র।
‘ভেহিকল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস’ (ভিএলটিডি) বসানো নিয়ে এ বার পরিবহণ দফতরকেই একঝাঁক প্রশ্নমালা পাঠাল একটি বেসরকারি পরিবহণ সংগঠন। মাস খানেক আগে বাণিজ্যিক গাড়িতে ভিএলটিডি লাগানোর বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে পরিবহণ দফতর। প্রথমে চলতি বছরের মধ্যেই এই নতুন প্রযুক্তিটি গাড়িতে লাগানোর নির্দেশ দিলেও, সম্প্রতি আরও একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়িতে ১ ডিসেম্বর থেকে ‘ভেহিকল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস’ বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে নিজেদের আগের সিদ্ধান্ত বদল করা হচ্ছে। নতুন জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১ এপ্রিল থেকে ভিএলটিডি ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে। ৩১ মার্চের মধ্যে বেসরকারি গাড়ির মালিকদের এই ডিভাইসটি নিজেদের গাড়িতে বসাতে হবে। নতুন এই সিদ্ধান্তটি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে গাড়ির ‘ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট’ (সিএফ) দেওয়া হবে।
এর পরেই পরিবহণ সংগঠন অনলাইন ক্যাব অপারেটার্স গিল্ডের তরফে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে। সেখানেই ভিএলটিডি সংক্রান্ত বিষয়ে একঝাঁক প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ভিএলটিডি প্রযুক্তি বসাতে কত খরচ হবে? দ্বিতীয়ত, ভিএলটিডি মেশিনগুলি রক্ষণাবেক্ষণে বছরে কত পরিমাণ খরচ? তৃতীয়ত, নতুন এই প্রযুক্তিতে যদি কোনও গোলমাল বা ত্রুটি দেখা দেয় তার জন্য কে দায়ী থাকবে? চতুর্থত, কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের পর থেকে যে সব গাড়ি রাস্তায় নামবে তাতে এই প্রযুক্তি লাগানো থাকবে, যদি এই প্রযুক্তি লাগানো না থাকে তা হলে দায় কার হবে? এমনই সব প্রশ্ন তুলে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নতুন প্রযুক্তি নিয়ে গাড়িচালকদের কোনও ধ্যানধারণা নেই। তা ছাড়া নতুন এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিক গাড়িতে বসাতে যথেষ্ট ব্যয় হবে। তাই আমরা চাই পরিবহণ দফতর আমাদের সঙ্গে অবিলম্বে এই সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনায় বসুক।’’ সংগঠনের দাবি, প্রত্যেকটি গাড়িতে এই প্রযুক্তি বসাতে প্রায় ১৫ হাজার টাকা করে খরচ। তাই এ বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করুক রাজ্য পরিবহণ দফতর।
সংগঠনের চিঠির উত্তরে এখনও পরিবহণ দফতর কোনও জবাব দেয়নি। তবে তারা জানিয়েছে, ভিএলটিডি প্রযুক্তি ৩১ মার্চের মধ্যে বাণিজ্যিক গাড়িতে না বসানো হলে দৈনিক ৫০ টাকা করে জরিমানা হবে। ক্যাবচালকদের পাশাপাশি বেসরকারি বাসমালিকদেরও নতুন এই প্রযুক্তি গাড়িতে বসাতে আপত্তি রয়েছে। বেসরকারি বাসমালিকরা সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্যের দাবি তুলেছেন।