medical college

‘বাংলাদেশ থেকে রোগী এসেছেন, অস্ত্রোপচার বৃহস্পতিবার’, আতান্তরে মেডিক্যালে ‘আটক’ চিকিৎসক

যে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের বৃদ্ধ রোগীর চোখের অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা, তিনি বিক্ষোভকারীদের হাতে ঘেরাও হয়ে রয়েছেন। রোগীর পাশাপাশি সেই চিকিৎসকও আতান্তরে পড়েছেন।

Advertisement
সারমিন বেগম
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:৪৯
বিক্ষোভকারীদের হাতে ঘেরাও হয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু উৎকর্ষকেন্দ্রের ডিরেক্টর অসীমকুমার রায়।

বিক্ষোভকারীদের হাতে ঘেরাও হয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের চক্ষু উৎকর্ষকেন্দ্রের ডিরেক্টর অসীমকুমার রায়। —নিজস্ব চিত্র।

মেডিক্যাল কলেজের বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের হাতে চিকিৎসকেরা ‘আটক’ হওয়ায় বিপাকে পড়লেন বাংলাদেশ থেকে আসা এক বৃদ্ধ রোগী। বৃহস্পতিবার তাঁর রেটিনায় অস্ত্রোপচার করানোর কথা ছিল। তবে যে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তাঁর অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা, তিনি বিক্ষোভকারীদের হাতে ঘেরাও হয়ে রয়েছেন। ফলে রোগীর পাশাপাশি আতান্তরে পড়েছেন সেই চিকিৎসকও। আগামী বৃহস্পতিবার ওই বাংলাদেশি রোগীর অস্ত্রোপচার করতে পারবেন কি?

স়ঞ্জয় রায় নামে ৬০ বছরের এক বাংলাদেশি রোগীর রেটিনার ম্যাকুলায় ফুটো হয়েছে। ফলে সব কিছু ও ঝাপসা দেখা বা বাঁকা অবস্থায় দেখছেন তিনি। এই সমস্যার সমাধানে কলকাতায় এসে মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সঞ্জয়। মেডিক্যালের চিকিৎসকদের পরামর্শ ছিল, অস্ত্রোপচার করলে হয়তো এই সমস্যার কিছুটা সুরাহা হতে পারে। সেই পরামর্শ মেনে রেটিনায় অস্ত্রোপচার করানোর জন্য ৩ মাস আগে থেকে মেডিক্যালের চিকিৎসকদের কাছে সময় চেয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন সঞ্জয়। অস্ত্রোপচারের আগে প্রয়োজনীয় পরীক্ষার দিন ঠিক হয়েছিল মঙ্গলবার। ঘটনাচক্রে, সেই পরীক্ষা করানোর দিনেই বিক্ষোভকারীদের হাতে ঘেরাও হয়েছেন মেডিক্যালের চক্ষু উৎকর্ষকেন্দ্রের ডিরেক্টর অসীমকুমার রায়। ফলে মঙ্গলবার সঞ্জয়ের চোখের পরীক্ষা করানো সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার আদৌ তাঁর অস্ত্রোপচার করানো সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েও এ বার চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

রোগীর পাশাপাশি এ নিয়ে চিন্তিত অসীমও। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে আসা এক ব্যক্তির আমার তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচার করানোর কথা ছিল। তিনি নিশ্চয়ই মানসিক নির্ভরতা নিয়ে আমার কাছে অপারেশনের জন্য এসেছিলেন। ৩ মাস আগে এসে অপারেশনের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্টও করে গিয়েছিলেন। আজ (মঙ্গলবার) ওঁর চেক-আপ করানোর কথা ছিল।’’

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দিন ধরেই মেডিক্যালের ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবি তুলে আন্দোলন চালাচ্ছেন সেখানকার পড়ুয়ারা। ২০১৬ সালের পর থেকে মেডিক্যালে সেই নির্বাচন হয়নি। মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ আগে জানিয়েছিলেন, এই নির্বাচন সম্পর্কে ২২ ডিসেম্বর বিস্তারিত ভাবে জানানো হবে। যদিও তা পিছিয়ে যায়। পরে এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না হওয়ায় সোমবার দুপুর থেকে আবার বিক্ষোভ শুরু করেন পড়ুয়ারা। মেডিক্যালের প্রশাসনিক ব্লকে ঘেরাও করা হয়েছে অধ্যক্ষ-সহ বহু বিভাগীয় প্রধানকে। বিক্ষোভের জেরে রোগীরা বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ। অসীমের মতে, ‘‘যদিও কোনও কারণে আজ এঁরা (মঙ্গলবার আন্দোলনকারী) আমাদের ছেড়ে দেন, তবে আগামিকাল (বুধবার) বাংলাদেশি ওই রোগীকে পরীক্ষার পর বৃহস্পতিবার তাঁর অপারেশন করতে পারব। আগামিকাল কী হবে, জানি না। তবে আমি আশাবাদী, স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্যসচিব নিশ্চয়ই একটা কিছু ব্যবস্থা করবেন।’’

আরও পড়ুন
Advertisement