কুম্ভের পথে সস্ত্রীক বাঁকাচাঁদ। —নিজস্ব চিত্র।
স্ত্রী স্বর্ণলতার অনেক দিনের ইচ্ছা কুম্ভমেলা যাওয়ার। এত বছরে হয়ে ওঠেনি। টাকাপয়সার সমস্যা রয়েছে। তবে এ বার আর অন্য কিছু না ভেবে ৭৩-এর স্ত্রীকে নিয়ে কুম্ভের উদ্দেশে বেরিয়েই পড়লেন ৭৮ বছরের বৃদ্ধ। কিন্তু যাচ্ছেন কিসে? বৃদ্ধ বাঁকাচাঁদ রিকশার প্যাডলে পা দিয়ে বোঝালেন তিনচাকার যানই তাঁর ভরসা। অশক্ত শরীরে মনের জোরকে পাথেয় করে স্ত্রীকে রিকশায় বসিয়ে নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে কুম্ভমেলায় উদ্দেশে যাত্রা করলেন বৃদ্ধ।
প্রতি রবিবার নিয়ম করে সাইকেলপ্রেমী বন্ধুদের নিয়ে ৪০–১০০ কিমি ভ্রমণ করতে বেরিয়ে পড়েন দুলাল বিশ্বাস ওরফে বাঁকাচাঁদ। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ডাকে ‘নদী বাঁচাও, জল বাঁচাও’ স্লোগান নিয়ে সাইকেল অভিযানের একেবারে সামনে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। এ বার তিনি রিকশা চালিয়ে যাচ্ছেন কুম্ভ। কেন এমন অদ্ভুত ইচ্ছে?
বাঁকাচাঁদ জানালেন খরচ এবং ভিড়, দুটোই তিনি এড়াতে চান। তিনি বলেন, ‘‘ট্রেন কিংবা রিজার্ভ করা বাসে ঘুরতে বার হলে নিজের মতো কিছুই দেখা যায় না। খরচও অনেক বেশি। তাই সাইকেলে বা রিকশায় দেশ দেখতে ভালোবাসি।’’
কৃষ্ণনগরের হাইস্ট্রিটে দর্জির দোকান ছিল বাঁকাচাঁদের। এখন কাজ কমিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘বছর ১২ আগে এই রিকশার উপরে গ্রিলঘেরা বক্স শেড বানিয়ে দিয়েছিল বন্ধুরা। সে বার একাই সাইকেলে কামাখ্যা যাব ঠিক করেছিলাম। স্ত্রী স্বর্ণলতা সঙ্গী হতে চেয়েছিল। গিয়েছিলাম। এ বার আমরা যাব কুম্ভ।’’ রবিবার বিকেলে কৃষ্ণনগর থেকে সস্ত্রীক রওনা হয়েছেন বাঁকাচাঁদ। বাহন রিকশা।