ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে মনিটরিং কমিটির প্রথম বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে সাংসদ দেব এবং অন্যান্য বিশিষ্টজন। —নিজস্ব চিত্র।
গত লোকসভা ভোটে লড়াই করার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তৃতীয় বার ঘাটাল লোকসভা থেকে জয়ী হওয়ার পর কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন। ‘প্রতীক্ষিত’ ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ শেষ কবে হবে, তার সময় এ বার জানালেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ দীপক অধিকারী (দেব)। মঙ্গলবার তিনি জানান, আগামী ২০২৮ সালের মার্চের মধ্যে শেষ হবে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ। বিশাল ওই প্রকল্প বাস্তবায়নে ঘাটালের সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। সাংসদ বলেছেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যেন ভুল বার্তা না-দেন। তাতে প্রকল্পের বাস্তবায়নের সময় দীর্ঘায়িত হবে।
কিছু দিন আগে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। কী ভাবে ওই প্রকল্পের কাজ হচ্ছে এবং পরিকল্পনা কী, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে মনিটরিং কমিটির প্রথম বৈঠক ছিল ঘাটালের মহকুমা শাসকের দফতরে। উপস্থিত ছিলেন সাংসদ দেব, রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, মুখ্যসচিব মণীশ জৈন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি, পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার প্রমুখ। বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী মানস জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নজরদারিতে আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই শুরু হতে চলেছে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ। প্রকল্পের কাজের সূচনার দিন মুখ্যমন্ত্রীকে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হবে। দেব বলেন, ‘‘প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য সহযোগিতার দরকার। তার মানে এটা বলছি না যে, কোনও রাজনৈতিক দলকে বোঝাতে হবে। তারা যাতে কাউকে ভুল না-বোঝান, সেই আবেদন করছি।’’ মানস বলেন, ‘‘ঘাটালের মানুষ জল, বন্যায় তিতিবিরক্ত। তাঁরা এ বার মুক্তি চাইছেন।’’
বস্তুত, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের জন্য শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, পূর্ব মেদিনীপুরেরও দু’টি ব্লক-সহ মোট সাতটি ব্লক এবং দু’টি পুর এলাকায় কাজ হচ্ছে। জমিদাতাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে তবেই কাজ শুরু করা হবে জানিয়েছেন ঘাটালের সাংসদ।
ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান রূপায়ণের দাবি দীর্ঘ দিনের। প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের সংঘাতও নতুন নয়। তার জেরে আটকে ছিল ঘাটালের ওই প্রকল্প। গত লোকসভা ভোটের আগে আরামবাগের এক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান রাজ্য সরকার একাই করবে। ওই সময়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ঘাটালের ওই প্রকল্প শুরুর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তার পরেই রাজ্য সরকার কবে এই প্রকল্পের শিলান্যাস করবে, তা নিয়ে কৌতূহল বাড়তে থাকে।