জয়ের পর উচ্ছ্বসিত তৃণমূল এবং বাম প্রার্থীরা।—নিজস্ব চিত্র।
সমবায় সমিতির নির্বাচনে সিপিএমের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে বিজেপিকে ধরাশায়ী করল তৃণমূল। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘গড়’ বলে পরিচিত পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের ঘটনা। নয় আসনের সমবায় ভোটে হেরে গিয়ে ঘাসফুল এবং কাস্তে-হাতুড়ি জোটকে নিশানা করল পদ্মশিবির।
তমলুকের শ্রীরামপুর-২ গ্রাম চংরাকালাগণ্ডা সমবায় কৃষি সমিতির নির্বাচন ছিল মঙ্গলবার। সিপিএম প্রভাবিত ওই এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে ভাল ফল করেছিল বিজেপি। স্বাভাবিক ভাবে সমবায় কৃষি সমিতির দখল নিতে এ বার মরিয়া ছিল শুভেন্দুর দল। কিন্তু বিজেপিকে ঠেকাতে জোটবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন স্থানীয় বাম এবং তৃণমূল নেতৃত্ব। ন’টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ছ’টি এবং বামেরা তিনটি আসনে প্রার্থী দেয়। সব ক’টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল বিজেপি। ভোটের ফল বেরোতে দেখা গেল বিজেপি পেয়েছে তিনটি আসন। তৃণমূল এবং সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা তিনটি করে আসনে জয়লাভ করেছেন। ৬-৩ ফলাফলে সমবায়ের পরিচালন সমিতিতে ক্ষমতায় জোট প্রার্থীরা। সমবায়ের প্রাক্তন সম্পাদক তথা জোট প্রার্থী সোমনাথ পাত্র বলেন, ‘‘আমি দীর্ঘ দিন ধরে এই সমবায়ের সঙ্গে যুক্ত। ১০ বছর সেক্রেটারির দায়িত্ব সামলেছি। বিগত পরিচালন কমিটিতে সদস্য হিসাবেও কাজ করেছি। এ বার যাঁরা বিজেপির হয়ে লড়াই করছেন, তাঁরা একেবারে আনকোরা। সমবায়ের ক্ষমতা দখলে নিয়ে এলাকার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতেন এঁরা। বিজেপি-বিরোধী জোট গড়ে এঁদের বিপুল ভোটে পরাজিত করেছি আমরা। আমাদের জয়ের ব্যবধানও অনেক বেশি।’’
অন্য দিকে, ভোটে হেরে তৃণমূল এবং সিপিএমের এই জোটকে কটাক্ষ করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার-সহ সভাপতি তথা তমলুক পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা আশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘চংরাকালাগণ্ডা সমবায়ের ক্ষমতা দখলে মরিয়া তৃণমূল নিজেদের নীতি-আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে জোট বাঁধল কিনা সিপিএমের সঙ্গে!’’ আশিস আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল এত দিন রাম-বাম জোট বলে অনেক প্রচার করত। কিন্তু শ্রীরামপুর সমবায়ের ভোট বুঝিয়ে দিল তৃণমূল মুখে সিপিএমের বিরোধিতা করলেও তলে তলে জোট বেঁধে ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকতে চায়।’’ শ্রীরামপুর-২ অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি দিলীপকুমার সাউ বলেন, ‘‘সমবায়ের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে আমরা বিজেপি-বিরোধীরা একজোট হয়ে লড়াই করেছি। আমাদের এই লড়াই সাফল্য এনেছে। বিজেপিকে আমরা বিপুল ভোটে পরাজিত করেছি। এ বার শীঘ্রই সভাপতি, সম্পাদক নির্বাচন করে আমরা সমবায়ের কাজকর্ম স্বাভাবিক করতে উদ্যোগী হব।’’