(বাঁ দিকে) দুলাল সরকার, চৈতালি ঘোষ সরকার (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
পুলিশি তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন নিহত মালদহের তৃণমূল নেতা দুলালচন্দ্র সরকার ওরফে বাবলার স্ত্রী চৈতালি ঘোষ সরকার। তৃণমূল নেতা খুনে এখন পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের মালদহ শহর সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি। চৈতালির দাবি, তাঁর স্বামীর খুনের ঘটনায় আরও লোক জড়িত। কারা জড়িত, তা তদন্ত করে পুলিশকে জানাতে হবে। তাঁর অভিযোগ তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাবেন বলেও জানিয়েছেন। এর আগে বাবলার খুনের জন্য পুলিশের গাফিলতিকে দায়ী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
দুলালের স্ত্রী চৈতালি বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, তিনি পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট নন। তাঁর কথায়, ‘‘তদন্তে সন্তুষ্ট নই। এর শেষ দেখতে চাই।’’ চৈতালি এ-ও দাবি করেছেন যে, এই খুনের ঘটনায় আরও অনেকে যুক্ত রয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘রাজনীতি করার সঙ্গে সঙ্গে আমি একজন আইনজীবী। আমি এটা ভাল করে বুঝতে পারছি যে, এই ঘটনায় আরও অনেকে যুক্ত রয়েছেন। ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে কি না, সেটা বলব না। তবে আমার দল এবং প্রশাসনের উপর বিশ্বাস রয়েছে, তারা অভিযুক্তদের বার করবে। আমি অপেক্ষায় রয়েছি।’’
চৈতালি এ-ও জানিয়েছেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গেও দেখা করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘দুলালের স্মরণসভা রয়েছে। আমি তার পরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব।’’ চৈতালি জানিয়েছেন, পুলিশ জিজ্ঞেস করলে তাঁর অভিযোগের কথা বলবেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার যা অভিযোগ, পুলিশ জিজ্ঞেস করলে আমি বলব। আমার দলের নেত্রীকে আমি বলব। আমি ক্যামেরার সামনে কিছু বলব না।’’
দুলালের মৃত্যুতে পুলিশের গাফিলতিকে দায়ী করেছেন মমতা। পুলিশের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকের শুরুতে বলেছিলেন, “অবশ্যই পুলিশের গাফিলতিতে খুন হয়েছে। ওর উপর আগেও আক্রমণ করা হয়েছিল। আগে নিরাপত্তা পেত। পরে সেটা তুলে নেওয়া হয়।” এ বার একই সুর শোনা গেল চৈতালির গলায়।
তৃণমূল নেতা খুনে এ পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার জানান, পাঁচ ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদের পর নরেন্দ্রনাথকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁকে এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ স্বপন শর্মাকে মঙ্গলবার রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। বুধবার সকালে দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়। ইংরেজবাজার পুরসভার কাউন্সিলর তথা মালদহের তৃণমূল সহ-সভাপতি দুলালকে খুনের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার সুপারি দেওয়া হয়েছিল বলেও জানায় পুলিশ।
গত ২ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের প্লাইউড কারখানার সামনে খুন হন দুলাল। বাইকে চেপে এসে তিন জন দুষ্কৃতী দুলালকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি করে। হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি তাঁকে।