(বাঁ দিকে) নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি এবং দুলাল সরকার (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।
মালদহের তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনে মূলচক্রী হিসাবে উঠে এসেছে তাঁর নাম। সেই তৃণমূল নেতা তথা দলের মালদহ শহর সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে এ বার বহিষ্কার করতে চলেছে রাজ্যের শাসকদল। মালদহ জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটেয় সাংবাদিক বৈঠক করে আনুষ্ঠানিক ভাবে নরেন্দ্রনাথকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মালদহের তৃণমূল সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সি। বৃহস্পতিবার থেকেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানান তিনি। সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন ইংরেজবাজার পুরসভার পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীও।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বের তরফে মালদহ জেলা কমিটিকে নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি সংক্রান্ত নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। বেলা আড়াইটেয় মালদহ জেলা কমিটি এ বিষয়ে ঘোষণা করবে।’’
নরেন্দ্রনাথ আপাতত পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। বুধবার রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার জানান, দুলালকে খুনে ‘মূলচক্রী’ তৃণমূলের মালদহ শহরের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ স্বপন শর্মা। ইংরেজবাজার পুরসভার কাউন্সিলর তথা মালদহের তৃণমূল সহ-সভাপতি দুলালকে খুনের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার সুপারি দেওয়া হয়েছিল বলেও জানায় পুলিশ।
তৃণমূল নেতা খুনে এ পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম জানান, পাঁচ ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদের পর নরেন্দ্রনাথকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁকে এবং স্বপনকে মঙ্গলবার রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সকালে দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়। বুধবার নরেন্দ্রনাথ এবং স্বপনকে আদালতে হাজির করানো হলে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আদালতে পুলিশ জানায়, টাকার লেনদেন, ফোনের কল রেকর্ডিং ইত্যাদি দেখে ওই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সুপ্রতিম বলেন, ‘‘স্বপন এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী। বোমাবাজি, খুন, দাঙ্গা-হাঙ্গামায় তাঁর নামে অজস্র অভিযোগ রয়েছে। তিনি এবং নরেন্দ্রনাথ এই ঘটনার (দুলাল খুনে) মূলচক্রী ছিলেন। কিন্তু কী কারণে তাঁরা টাকা দিয়েছিলেন, এখনও জানা যায়নি। এই খুনের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার বরাত দেওয়া হয়েছিল। মোট চার দুষ্কৃতীকে ওই টাকা দেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি দু’জন এখনও পলাতক।’’ প্রসঙ্গত, গত ২ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের প্লাইউড কারখানার সামনে খুন হন দুলাল। বাইকে চেপে এসে তিন জন দুষ্কৃতী দুলালকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি করে। হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি তাঁকে।