Krishnanagar Case

কৃষ্ণনগরের ‘নির্যাতিতা’কে ধার দেওয়া ৪০ হাজার ফেরত চাইছিলেন প্রেমিক, চাপ দিচ্ছিলেন কি? জল্পনা

কৃষ্ণনগরের ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইক কেনার জন্য উদ্‌গ্রীব ছিলেন যুবক। প্রেমিকাকে ধার দেওয়া টাকাও ফেরত চাইছিলেন সেই কারণে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ১১:৪৩
কৃষ্ণনগরকাণ্ডে অভিযুক্ত যুবক, যাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

কৃষ্ণনগরকাণ্ডে অভিযুক্ত যুবক, যাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।

কৃষ্ণনগরের তরুণীকে ৪০ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলেন তাঁর প্রেমিক। এমনটাই জানা গিয়েছে তদন্তকারীদের সূত্রে। তরুণীর মৃত্যুর পর ওই যুবককেই মূল অভিযুক্ত হিসাবে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে জেরার মাধ্যমে যুগলের সম্পর্ক বিষয়ে একাধিক তথ্য হাতে আসছে তদন্তকারীদের। সূত্রের খবর, অভিযুক্ত যুবকের বাইকের নেশা রয়েছে। বাইক চালাতে খুব ভালবাসেন তিনি। বাইক কেনার পরিকল্পনাও করেছিলেন। সেই কারণেই ধার দেওয়া টাকা ফেরত চাইছিলেন প্রেমিকার কাছ থেকে। টাকা ফেরতের আশ্বাসও তিনি পেয়েছিলেন বলে খবর। কিন্তু তার আগেই তরুণীর মৃত্যু হয়।

Advertisement

কৃষ্ণনগরের ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইক কেনার জন্য উদ্‌গ্রীব হয়ে পড়েছিলেন যুবক। প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়েই কিছু দিন আগে গিয়েছিলেন একটি বাইকের শোরুমে। সেখানে কালীপুজোর দিন বাইক বুক করবেন বলে জানিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, বাইক নিয়ে ইন্টারনেটে বিস্তর ঘাঁটাঘাঁটি করতেন যুবক। দেশি বা বিদেশি, যে কোনও বাইকের বিস্তারিত তথ্য তাঁর ঠোঁটস্থ।

পুলিশ সূত্রে খবর, বাইক কেনার তোড়জোড়ের মধ্যেই অন্য কোনও কারণে যুগলের মধ্যে খানিক দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। টাকা নিয়ে তাঁদের মধ্যে কোনও বচসা হয়েছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই সাময়িক দূরত্বের সময়ে অন্য কোনও যুবকের সঙ্গে তরুণীর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। টাকা ফেরত নিতে তরুণীকে কোনও ভাবে চাপ দিচ্ছিলেন কি প্রেমিক? সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তরুণীর সঙ্গে অভিযুক্তের কথোপকথন পরীক্ষা করে একাধিক তথ্য তদন্তকারীরা হাতে পেয়েছেন বলে খবর। তবে সে বিষয়ে বিস্তারিত এখনই প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার জন্যেও অপেক্ষা করছেন তদন্তকারীরা। ওই রিপোর্ট থেকে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে।

গত বুধবার কৃষ্ণনগরে তরুণীর অর্ধদগ্ধ অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। এই ঘটনার সঙ্গে প্রেমিক এবং আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারেন, সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তরুণীর মা-বাবা। তাঁরা জানিয়েছেন, পুলিশের তদন্তে তাঁদের আস্থা নেই। সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। অন্য দিকে ধৃত যুবকের বাবার দাবি, তাঁর পুত্র নির্দোষ। তিনি বলেছেন, ‘‘কারও সঙ্গে সম্পর্ক থাকতেই পারে। কিন্তু মেয়েটির মৃত্যু হলেই তার প্রেমিক দোষী হয়ে যেতে পারে না। পুলিশ ভাল করে তদন্ত করে দেখুক। আমরা সব রকম সহযোগিতা করব। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ঘটনার সঙ্গে আমার ছেলে কোনও ভাবেই যুক্ত নয়।’’ বৃহস্পতিবার কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে তরুণীর দেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। রাতে তাঁর শেষকৃত্য হয় নবদ্বীপের শ্মশানে। শুক্রবার বিশেষ ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থলে যেতে পারে।

Advertisement
আরও পড়ুন