বাগুইআটিতে হেলে পড়েছে জোড়া ফ্ল্যাটবাড়ি। ছবি: সংগৃহীত।
বাঘাযতীন, ট্যাংরার পরে বাগুইআটি। একটি নয়, বাগুইআটির জগৎপুরে দু’টি ফ্ল্যাটবাড়ি হেলে পড়েছে বলে নজরে এসেছে স্থানীয়দের। বিধাননগর পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বাড়ি হেলে পড়েছে। দ্বিতীয়টি ওই পুরসভারই ৩ নম্বর ওয়ার্ডে হেলে পড়েছে। বিষয়টি জানাজানি হতেই বিধাননগর পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ঝুঙ্কু মণ্ডল বাড়িটি দেখতে যান। এর পরে বিধাননগর পুরসভায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। বিধাননগর পুরসভার মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ওই দু’টি বহুতলই বাম আমলে নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে এখন তাঁদের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। একটি বাড়ির মালিক মিঠুন কর এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। দু’টি বাড়ির বাসিন্দারাই যে কোনও সময় ঘরছাড়া হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয়দের নজরে পড়ে যে, বিধাননগর পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে জগৎপুরের নেতাজিপল্লিতে একটি ফ্ল্যাটবাড়ি হেলে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুকুর বুজিয়ে ওই ফ্ল্যাটবাড়িটি তৈরি করা হয়েছিল। ক্রমে সেটি পাশের ফ্ল্যাটবাড়িটির গায়ে হেলে পড়ছে বলে দেখা গিয়েছে। ওই ফ্ল্যাটবাড়ির মালিক মিঠুন এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে ফ্ল্যাটবাড়ি। প্রাণহানি হতে পারে। ঘরছাড়া হতে পারেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকালে খবর পেয়ে ফ্ল্যাটবাড়িটি দেখতে যান ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ঝুঙ্কু। তিনি এই নিয়ে বিধাননগর পুরসভায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
বিধানননগর পুরসভার মেয়র কৃষ্ণা পূর্বতন বাম সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বাড়িগুলি বাম আমলেই তৈরি হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘যখন এই বাড়িগুলি তৈরি হয়েছিল, তখন এলাকাটি বিধানননগর পুরসভায় সংযুক্ত হয়নি। আমি খোঁজ নিয়েছি, বাড়িগুলি নির্মাণ হয়েছে ২০০৩-০৪ সালে। তখন বাম জমানা। কিন্তু যে হেতু এখন আমরা ক্ষমতায় রয়েছি, তাই আমাদের যা যা করণীয়, সব করা হচ্ছে। আমাদের কাউন্সিলর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখছেন।’’ পাশাপাশি, বিধাননগর পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ নারায়ণপুর অঞ্চলেও একটি ফ্ল্যাটবাড়ি হেলে পড়েছে বলে নজরে এসেছে স্থানীয়দের। আতঙ্কে রয়েছেন ওই বহুতলের বাসিন্দারাও।
বুধবার সকালে ট্যাংরায় হেলে পড়ে একটি নির্মীয়মাণ বহুতল। বাড়িটি তৈরি হচ্ছিল বলে সেখানে কেউ থাকতেন না। তবে মিস্ত্রিরা ছিলেন। তাঁদের সরিয়ে আনা হয়। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। তবে পাশের বহুতলে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণের ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার কোনও শর্তই মানা হয়নি। পাশের বাড়িগুলির সঙ্গে যে ন্যূনতম দূরত্ব রেখে নির্মাণকাজ করতে হয়, সেই বিষয়টিও মানা হয়নি। তার আগে বাঘাযতীনে কলকাতা পুরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডে একটি ফ্ল্যাটবাড়ি হেলে পড়েছিল। পর পর এই ঘটনার কারণে প্রশ্নের মুখে পড়েছে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ। এই নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘‘পুরসভা কি বাঁশ নিয়ে দাঁড়িয়ে হেলা বাড়ি সোজা করবে?’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, আইন অনুযায়ী কাজ করতে হয় পুরসভাকে। আর সেই আইন মেনেই কাজ করতে হবে পুরসভাকে। এ বার বিধাননগর পুরসভায় বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা চোখে পড়ল স্থানীয়দের।