(বাঁ দিকে) ট্যাংরার হেলে পড়া বাড়ি এবং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বাঘাযতীনের পর ট্যাংরায় বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনার পর থেকেই পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কলকাতায় পর পর বাড়ি হেলে পড়া নিয়ে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘পুরসভা কি বাঁশ নিয়ে দাঁড়িয়ে হেলা বাড়ি সোজা করবে?’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, আইন অনুযায়ী কাজ করতে হয় পুরসভাকে। আর সেই আইন মেনেই কাজ করতে হবে পুরসভাকে।
ট্যাংরার ক্রিস্টোফার রোডে নির্মীয়মাণ পাঁচতলা বহুতল এক দিকে হেলে পড়েছে। বুধবার সকালে সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। পাশেই প্রায় সমান উচ্চতার আর একটি বহুতল রয়েছে। তার গায়ে কাত হয়ে পড়ে বহুতলটি। তার পরই ওই বহুতল ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় পুরসভা। বলা হয়, দ্রুত বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হবে। দিন কয়েক আগেই বাঘাযতীনেও একটি বাড়ি বিপজ্জনক ভাবে হেলে পড়ে। শহরে পর পর বাড়ি হেলে পড়ায় দুই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই পুরসভার কাজ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। প্রশ্ন উঠেছে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কাজকর্ম নিয়েও। ওই এলাকার মাটি পরীক্ষা না করে কী ভাবে বহুতলটি নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ক্রিস্টোফার রোডের বাসিন্দারা। সরব হন বিরোধীরা।
এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, ‘‘হেলে পড়া বাড়ি নিয়ে এত আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু আমরা তা ভাঙার নির্দেশ দিয়েছি।’’ শুধু তা-ই নয়, পুরসভা কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন ফিরহাদ। তিনি জানান, বাড়ি তৈরির ব্যাপারে যে এলবিএস লিস্টেড ইঞ্জিনিয়ারেরা থাকেন, তাঁদের শো কজ় করা হয়েছে। বাঘাযতীনের বিপর্যয়ের পরেই পুরসভা তদন্ত শুরু করে। ফিরহাদ তা নিয়ে বলেন, ‘‘বাঘাযতীনের বাড়ি নিয়ে রিপোর্ট জমা পড়েছে কমিশনারের কাছে। তবে সেই রিপোর্ট সম্পর্কে আমি বিশদে কিছু জানি না। যদিও আমি আগেই বলেছি প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই বাঘাযতীনে বাড়ি হেলে পড়েছিল। রিপোর্ট দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
কলকাতায় হেলে পড়া বাড়ির সংখ্যা ৩০ বলে জানান ফিরহাদ। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের বাড়ি আছে। আমি মেয়র হওয়ার পর বেআইনি বাড়ি নিয়ে যে নিয়ম করে দিয়েছি, তা আগে কেউ করেননি। সেই নতুন নিয়মে কোনও ভাবেই বেআইনি বাড়ি তৈরি হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’’ পাশাপাশি এ-ও জানান, ‘বিল্ডিংস রুলে’ কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব আনা হয়েছে।
বাঘাযতীনে কলকাতা পৌরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি হেলে পড়ার পরেই প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়। ট্যাংরার ঘটনাটি ঘটেছে আরও এক মেয়র পারিষদ সন্দীপন সাহার ওয়ার্ডে। অনেকেই কাউন্সিলরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তা নিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘‘কলকাতা পুরসভার আইন অনুযায়ী বেআইনি নির্মাণ বা বাড়ির অনিয়মের ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের কোন ভূমিকা নেই।’’