মহারাষ্ট্রের জলগাঁও জেলায় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে ১৩ জন যাত্রীর। ছবি: পিটিআই।
মহারাষ্ট্রের জলগাঁও জেলায় ট্রেন দুর্ঘটনায় যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আট জনের দেহ শনাক্ত করা গিয়েছে। কিন্তু এখনও পাঁচটি দেহ শনাক্ত করা যায়নি। অনেকে আপনজনের দেহাংশ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। অনেকে দেহ চিনতে পেরে ভেঙে পড়ছেন কান্নায়।
পুষ্পক এক্সপ্রেসের মৃত যাত্রীদের মধ্যে চার জন নেপালের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁরা ঠাণে যাচ্ছিলেন। চার জনকেই তাঁদের আত্মীয়েরা শনাক্ত করতে পেরেছেন। বুধবার বিকেলে পুষ্পক এক্সপ্রেসে আচমকা আগুন লেগেছে বলে আতঙ্ক ছড়ায়। কামরার ভিতরে আগুনের ফুলকি দেখা গিয়েছিল বলে অভিযোগ। যাত্রীরা চেন টেনে ট্রেন থামান। আতঙ্কে অনেকে ওই কামরা থেকে বাইরে লাফ দিয়ে নেমেছিলেন। সেই সময়ে উল্টো দিক থেকে ছুটে আসে কর্নাটক এক্সপ্রেস। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের উপর দিয়ে চলে যায় সেই ট্রেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই ১৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেকে।
মহারাষ্ট্র সরকার ইতিমধ্যে মৃতদের পরিবারের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে। আহতদের চিকিৎসার খরচও সরকার বহন করবে। আলাদা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে রেলের তরফেও।
পুষ্পক এক্সপ্রেসে ছিলেন নেপালের বাসিন্দা লচ্চিরাম পাসি। তাঁর ভাইপো রামরং পাসি বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর দেহ শনাক্ত করেছেন। রামরং বলেন, ‘‘কাকার দেহ তো পেয়েছি। কিন্তু হাত আর পায়ের কিছু অংশ এখনও খুঁজে পাইনি।’’
বুধবারের দুর্ঘটনায় মাকে হারিয়েছেন তপেন্দ্র ভান্ডারি। তিনিও নেপাল থেকে এসেছিলেন ভারতে। লখনউতে ছিলেন তাঁরা। বুধবারই মাকে ঠাণেতে পাঠান। স্টেশনে মাকে ট্রেনে তুলে দিতেও এসেছিলেন। সেখানে মায়ের ছবিও তুলেছিলেন। সেটাই যে শেষ দেখা হবে, ভাবতে পারেননি। মায়ের শাড়ি বুকে জড়িয়ে ঘটনাস্থল থেকে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গিয়েছেন। যেখানে তাঁর মায়ের দেহ ছিল, সেই অংশের রক্তমাখা নুড়িও পকেটে ভরে নিয়েছেন তপেন্দ্র। মায়ের সঙ্গে আচমকা এই বিচ্ছেদ তিনি মেনে নিতে পারছেন না। কী ভাবে নেপালে দেহ ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন, তা নিয়েও চিন্তায় পড়েছেন। এ বিষয়ে তিনি ভারত সরকারের সাহায্য চেয়েছেন। পিটিআই জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে অপর দুই নেপালি নাগরিক হলেন ৬০ বছরের জবকালা ভাটে এবং ১১ বছরের ইমতিয়াজ় আলি।