বিজেপি প্রার্থী (বাঁ দিকে) সোনালি মান্ডি। সিপিএম প্রার্থী লক্ষ্মীরানি মান্ডি (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটে দুই প্রার্থীর বাড়ি পাশাপাশি। সম্পর্কে তাঁরা শাশুড়ি এবং বৌমা। পারিবারিক সম্পর্ক ভালই। কিন্তু ভোটের ময়দানে যুযুধান বৌ-শাশুড়ি দু’জনেই চান জিততে। বৌমা বলছেন, ‘‘ওঁর আশীর্বাদ নিয়েছি জেতার জন্য।’’ শাশুড়ির কথায়, ‘‘আমি তো বড়। তাই বড় ব্যবধানে জিততে চাই।’’
জমে উঠেছে হুগলির পাণ্ডুয়ার সিমলাগড় ভিটাসিন গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোটের লড়াই। বাড়তি উত্তেজনার কারণ হল, দুই প্রার্থীই একই পরিবারের। সিপিএম প্রার্থীর নাম লক্ষ্মীরানি মান্ডি। বিজেপি প্রার্থীর নাম সোনালি মান্ডি। সিপিএম প্রার্থী সম্পর্কে বিজেপি প্রার্থীর খুড়শাশুড়ি। একই পরিবার থেকে পৃথক দুই দলের রাজনৈতিক লড়াইয়ের আঁচ পারিবারিক সম্পর্কে পড়তে দিতে চান না দু’জনই। তবে পরে কী হবে, জানেন না বৌমা। তিনি জানান, সম্পর্ক ঠিক রাখার চেষ্টা করে যাবেন। বাকিটা তাঁর হাতে নেই।
একশো দিনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। আবার গ্রামে আবাস যোজনার টাকা পাচ্ছেন না মানুষ। মূলত এই অভিযোগ এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দাবি নিয়ে প্রচার করছেন সিপিএম প্রার্থী লক্ষ্মীরানি। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামে পানীয় জলের অভাব আছে। রাস্তাটাও ঢালাই হয়নি।’’ রাস্তা-পানীয় জলের সমস্যা মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী সোনালিও। তবে দুই দলের দুই প্রার্থী চান গ্রামের উন্নয়ন।
সোনালির কথায়, ‘‘শাশুড়ির পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছি। উনি আশীর্বাদ করেছেন। বলেছেন, ‘জয়ী হও।’ চেষ্টা করব, যাতে সংসারে গন্ডগোল না হয়।’’ বিজেপি প্রার্থীর সংযোজন, ‘‘পারিবারিক ব্যাপারে যেন রাজনীতি ঢুকে না পড়ে, সেই চেষ্টা করব। পরে কী হবে জানি না।’’ সিপিএম প্রার্থী তথা সোনালির খুড়শাশুড়ি লক্ষ্মীরানি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে আমার দল আমাকে দাঁড় করিয়েছে। এখানে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে অসন্তোষ আছে। জয়ী হলে সবাইকে কাজ দেব। সরকারি আবাস প্রকল্প নিয়ে সমস্যা আছে। সেই সমস্যা দূর করার চেষ্টা করব।’’ বিরোধী প্রার্থীকে নিয়ে লক্ষ্মীরানি বলেন, ‘‘বৌমা দাঁড়িয়েছে বিজেপি থেকে। আমাদের সম্পর্ক খুব ভাল। ও ওর মতো লড়ছে। আমি আমার মতো লড়ছি। ওর বাড়িতেও যাব। বলব, আমায় ভোট দাও।’’
পোটবা গ্রামে ১১০ নম্বর বুথে ভোটের লড়াইয়ে বিজেপি, সিপিএমের সঙ্গে রয়েছে তৃণমূলও। তারা জানাচ্ছে যে যাই বলুন, নির্বাচনে জয়ী হবে শাসক দলই।