Junior Doctors' Protest

গর্বিত হলেও ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভয় লাগে! মুখ খুললেন আন্দোলনকারী দেবাশিসের মা

গত ৯ অগস্ট আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সরব হয়েছেন রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তারেরা। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে আন্দোলন। কিঞ্জল, অনিকেত, রুমেলিকাদের পাশাপাশি সেই আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছেন হুগলির দেবাশিসও।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৫০
দেবাশিস হালদার।

দেবাশিস হালদার। — ফাইল চিত্র।

মাধ্যমিকে রাজ্যে অষ্টম স্থান, উচ্চ মাধ্যমিকে একাদশ। হুগলির সেই মেধাবী ছেলে দেবাশিস হালদার এখন জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ। ছেলের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে চোখে জল মায়েরও।

Advertisement

বাড়ি হুগলির বলাগড়ের খামারগাছি এলাকায়। ছোট থেকেই মেধাবী, বরাবর স্কুলে প্রথম হতেন। শুধু পড়াশোনা নয়, আঁকা, আবৃত্তিতেও প্রথম পুরস্কার ছিল বাঁধা। ঘরের আলমারিতে থরে থরে সাজানো বই, তার পাশেই রয়েছে একাধিক সাফল্যের স্বীকৃতি। দাদাগিরির মঞ্চে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত থেকে পুরস্কারও নিয়েছিলেন। সেই সোনার ছেলেই আজ হয়ে উঠেছেন জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিবাদী আন্দোলনের মুখ।

এই আন্দোলনে পাশে পরিবারও। গত ছয় মাস আগেই বিয়ে হয়েছে দেবাশিসের। তাঁর স্ত্রীও জুনিয়র ডাক্তার। স্বামীর সঙ্গে আন্দোলনে শামিল তিনিও। দেবাশিসদের আদি বাড়ি খামারগাছির সিজা বাজারের কাছে মুক্তকেশীতলায়। পরে অসম লিঙ্ক রোডের পাশে পরিবার-সহ উঠে আসেন তাঁরা। বর্তমানে গ্রামের বাড়িতে থাকেন মা অনিমা, বাবা ক্ষিতীশ এবং পিসি মীরা হালদার।

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে দেবাশিসের এই ভূমিকায় গর্বিত বাবা-মা। আঁচলে চোখের জল মুছতে মুছতে মা বলছেন, ‘‘ও ন্যায়ের জন্য আন্দোলন করছে। আমরা খুশি। ছোট থেকে কখনও মিথ্যার আশ্রয় নিত না। বেশির ভাগ সময়ই পড়াশোনা নিয়ে ডুবে থাকত। তবে ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয় লাগে। আবার এটা ভেবেও সাহস জাগে যে, সিনিয়র ডাক্তারেরা ওদের পাশে রয়েছেন। একজন মা হিসাবে তরুণী চিকিৎসকের উপর নির্যাতনের বিচার চাই।’’ একই কথা বলছেন পিসি মীরা হালদার। তাঁর কথায়, ‘‘ওর এই আন্দোলনে আমাদেরও সমর্থন রয়েছে।’’

বাবা ক্ষিতীশ হালদার বলেন, ‘‘আন্দোলন যে এত বড় আকার নেবে, ভাবতে পারিনি। গোটা বিশ্বে আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে। জুনিয়র ডাক্তারেরা যে ভাবে আন্দোলন করছে, তাতে আমি গর্বিত। ধর্নামঞ্চে আমরাও গিয়েছিলাম, সাধারণ মানুষ ওদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, এটা দেখে আমার আরও বেশি ভাল লেগেছে। এই আন্দোলনকে আমি কুর্নিশ জানাই।’’

কামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন দেবাশিস। ২০০৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে অষ্টম হন। ২০১১ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে দখল করেন একাদশ স্থান। এর পর ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় (নিট) সাফল্য। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস করেন। মেডিক্যাল কলেজে পড়াকালীনই ছাত্র রাজনীতিতে যোগ। মেডিক্যাল কলেজ ডেমোক্র্য়াটিক স্টুডেন্টস ফেডারেশন (এমসিডিএসএ)-র বাইরে একটি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগঠন পিডিএসএফের সঙ্গেও যুক্ত তিনি। দেবাশিস এই মুহূর্তে কলকাতা মেডিক্যালের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগে কর্মরত তিনি। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ আন্দোলনের অংশ হিসেবে তিনি ‘শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ’-এর একজন সামনের সারির মুখ।

Advertisement
আরও পড়ুন