সিঁথির মোড়ের কাছে বিটি রোড সংলগ্ন এলাকায় ইডির অভিযান। — নিজস্ব চিত্র।
আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তে এ বার তৎপর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজ্যের ৬ জায়গায় হানা দিয়েছেন ইডির আধিকারিকেরা। তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা সুদীপ্ত রায়ের উত্তর কলকাতার ঠিকানায় অভিযান চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। সুদীপ্ত শ্রীরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক। পাশাপাশি আরজি করের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সিঁথির মোড়ের কাছে বিটি রোডের ধারে সুদীপ্তর বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআইয়ের একটি তদন্তকারী দল। আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, সেই তালিকায় ছিলেন তৃণমূলের এই চিকিৎসক নেতাও।
উত্তর কলকাতায় সুদীপ্তের ওই বাড়ির পাশাপাশি ইডির অপর একটি দল পৌঁছে গিয়েছে বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডেও। সেখানেও এক ওষুধ ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা।
এ ছাড়া হুগলিতেও গিয়েছিল ইডির একটি দল। সেখানে দাদপুরের দাঁড়পুর গ্রামে একটি বাংলোয় অভিযান চলছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে ওই বাংলোটি সুদীপ্তর। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার তল্লাশির পর ওই বাংলো ছাড়েন ইডির আধিকারিকেরা।
মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্টে আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের মামলার শুনানি রয়েছে। শীর্ষ আদালতে সেই শুনানির কয়েক ঘণ্টা আগেই আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে অভিযানে নামল ইডি।
আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তে আগেই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তার পর থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আতশকাচের তলায় ছিলেন শ্রীরামপুুরের বিধায়ক তথা শাসকদলের চিকিৎসক নেতা। তিনি রাজ্যের হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের সদস্য এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের প্রাক্তন সভাপতিও বটে।
গত বৃহস্পতিবার বিধায়কের বাড়ি ও বাড়ি লাগোয়া তাঁর মালিকানাধীন একটি নার্সিং হোমে অভিযান চালিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলেছিল তল্লাশি। সিবিআই বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর অবশ্য সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুদীপ্ত জানিয়েছিলেন, তদন্তকারী আধিকারিকদের সব রকম ভাবে সহযোগিতা করবেন তিনি।
সম্প্রতি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছিলেন যে, আরজি কর হাসপাতালের যন্ত্রপাতি নিজের নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছেন সুদীপ্ত। এই প্রসঙ্গে শ্রীরামপুরের বিধায়ককে সে দিন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, “১৯৮৪ সালে আমি নার্সিংহোম তৈরি করি। বাম আমলে তিলে তিলে এটাকে দাঁড় করিয়েছি। যে কেউ আমার নার্সিংহোমে গিয়ে যাচাই করতে পারেন, আমি এমন কিছু কাজ করেছি কি না।”
শেষ খবর অনুযায়ী, গভীর রাত পর্যন্ত চিকিৎসকের সিঁথি এলাকার বাড়ি থেকে বেরোতে দেখা যায়নি সিবিআইকে।