Mamata Banerjee

মমতার কথা শোনার পরেই উৎসব স্বাস্থ্য ভবনের সামনে, চিকিৎসক নেতারা যেতেই স্লোগান-নাচ হল সংযত

মমতা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ডিএমই এবং ডিএইচএসকে সরানো হবে। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকেও সরাতে হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:১১
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি পূরণের উচ্ছ্বাস।

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি পূরণের উচ্ছ্বাস। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিদল দীর্ঘ বৈঠকের পর তাঁর বাড়ি থেকে বার হওয়ার পরেই সাংবাদিক সম্মেলন শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন, জুনিয়র চিকিৎসকদের অনেকগুলি দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম কলকাতার পুলিশ কমিশনার বদল। সেই ঘোষণা হতেই স্লোগানের তালে আদিবাসী ছন্দে নাচ শুরু হয়েছিল সল্টলেক সেক্টর ফাইভে। কিন্তু সেই উৎসবের রেশ থেকে বেরিয়ে ধর্নামঞ্চ ফের আন্দোলন জারি রাখার চোয়াল শক্ত করে ফেলল। কালীঘাট থেকে সেক্টর ফাইভে পৌঁছে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, যত ক্ষণ না সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হচ্ছে তত ক্ষণ আন্দোলন এবং কর্মবিরতি চলবে।

Advertisement

মমতা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ডিএমই এবং ডিএইচএসকে সরানো হবে। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকেও সরাতে হবে। রাজ্য সরকার বিনয়ের সঙ্গে তা প্রত্যাখ্যান করে বাকি দুই স্বাস্থ্য কর্তার অপসারণ মেনে নিয়েছে। যা আন্দোলনকারীরা আংশিক জয় বলেই মনে করছেন।

পাঁচ দফা দাবি নিয়ে মমতার বাড়ির বৈঠকে গিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তার অনেকগুলিই রাজ্য সরকার মেনেছে। উল্লেখ্য, প্রথম যে দাবি, অর্থাৎ চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের বিচার, তা এখন সিবিআইয়ের এক্তিয়ারাধীন। জুনিয়র ডাক্তারেরাও তা মেনে নিয়েছেন। মমতা জানিয়েছেন, কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং ডিসি (উত্তর) অভিষেক গুপ্তকেও সরানো হবে। যা ছিল আন্দোলনকারীদের অন্যতম দাবি।

যত ক্ষণ না প্রশাসনিক নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে তত ক্ষণ এই আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানি রয়েছে। তার পরেই বিকেল চারটে নাগাদ প্রশাসনিক স্তরে রদবদল হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হওয়ার পরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত তাঁরা নেবেন।

মমতা বলেছেন, “ওঁরা বয়সে ছোট। ওঁদের দাবি মানা হয়েছে।” ডাক্তারেরা বলেছেন, তাঁদের আন্দোলনের সামনে নতজানু হতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য সরকার। এখন দেখার কখন প্রশাসনিক স্তরে রদবদল কার্যকর হয়। তার পর কোন পথে এগোয় চিকিৎসকদের আন্দোলন।

সোমবারের বৈঠকের পর সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম থেকে বলা হয়েছে, “সংগ্রামী অভিনন্দন আন্দোলনকারীদের। আন্দোলনের বিরাট জয়। দাবি মেনে কলকাতা পুলিশের কমিশনার, ডিএমই, ডিএইচএস, ডিসি(নর্থ)-কে সরানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং প্রতিরক্ষার বিষয়ে নজর দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি, ডাক্তারদের কাজের পরিবেশ উন্নত করার জন‍্য ১০০ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে। কিন্তু মূল অভিযুক্তদের চিহ্নিতকরণ, গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিষয়টি এবং স্বাস্থ্য দফতরে দুর্নীতিচক্র, সিন্ডিকেটরাজ, থ্রেট কালচার ইত‍্যাদি বিষয়গুলি নিয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবার কথা মাথায় রেখে জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্মঘট শিথিল কিংবা প্রত‍্যাহার করার বিষয়ে তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন এবং নির্যাতিতা বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা বিভিন্ন ভাবে আন্দোলনের যে পদক্ষেপ গুলি নেবেন সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম আগের মতোই তাঁদের পাশে থাকবে।”

আরও পড়ুন
Advertisement