সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গেল ডিএ মামলার শুনানি। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টে এ বার পিছিয়ে গেল রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ (মহার্ঘ ভাতা) মামলার শুনানিও। আগামী মার্চ মাসে শুনানি হবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। এর আগে মঙ্গলবার ডিএ মামলার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হওয়ার কথা ছিল এসএসসির ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের মামলা এবং ওবিসি (অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়) শংসাপত্র মামলা। ওই দু’টি মামলার শুনানিই পিছিয়ে যাওয়ার পরে ডিএ মামলার শুনানিও পিছিয়ে গেল।
এত দিন ডিএ মামলা ছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের বেঞ্চে। ৩১ জানুয়ারি বিচারপতি রায় অবসর নেবেন। মামলার পরবর্তী শুনানি তার পরে। সে কারণে বেঞ্চবদল অবশ্যম্ভাবী। নতুন বেঞ্চে যাবে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মামলা। মঙ্গলবার দুপুর ২টোর পরে মামলাটি শুনানির জন্য ওঠার কথা ছিল বিচারপতি হৃষীকেশ রায় এবং বিচারপতি এসভিএন ভাটির ডিভিশন বেঞ্চে। প্রায় ছ’মাস পরে সুপ্রিম কোর্টে ওঠার কথা ছিল সেটি। মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, মার্চ মাসে হবে পরের শুনানি।
২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর রাজ্যের ডিএ মামলা প্রথম বার সুপ্রিম কোর্টে উঠেছিল। গত বছর ১ ডিসেম্বর মামলাটির শেষ বার শুনানি হয়েছিল। ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছিল, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ নিয়ে আরও বিস্তারিত শুনানি প্রয়োজন। তার পরে সময়ের অভাবে মামলাটির আর শুনানি হয়ে ওঠেনি। এর আগে বিচারপতি মাহেশ্বরীর বেঞ্চে মামলাটি ছিল। তিনি অবসর নিয়েছেন। তার পরে মামলা গিয়েছিল বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের বেঞ্চে। এ বার তিনিও অবসর নিতে চলেছেন। তাই মার্চে নতুন বেঞ্চে উঠবে মামলা। কেন্দ্রীয় হারে এবং বকেয়া মহার্ঘ ভাতা বা ডিএর দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। ২০২২ সালের ২০ মে হাই কোর্ট রাজ্যকে কেন্দ্রের সমতুল ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। হাই কোর্টে জয়ী হয় রাজ্য সরকারি কর্মীদের কনফেডারেশন, ইউনিটি ফোরাম এবং সরকারি কর্মচারী পরিষদ। কিন্তু হাই কোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর মামলা দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে। প্রথম শুনানি হয় সে বছরের ২৮ নভেম্বর। রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। অন্য দিকে, মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় কয়েক দফায় ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এসএসসির ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের মামলারও শুনানি ছিল। তা পিছিয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না জানান, আগামী সোমবার মামলার শুনানি করা যেতে পারে। সব পক্ষ তাতে রাজি হয়। আগামী ১৫ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। মঙ্গলবার শুনানি হলে সিবিআইয়ের সওয়াল করার কথা ছিল। শুনানি না-হলেও আদালতের আগের নির্দেশ মোতাবেক মঙ্গলবার এই মামলায় রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিবিআইকে। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে মামলার সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষকে জমা দিতে হবে হলফনামা।
অন্য দিকে, ওবিসি (অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়) শংসাপত্র মামলার শুনানিও পিছিয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে। মঙ্গলবার এই মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা ছিল বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মসিহের বেঞ্চে। কিন্তু শুনানি হয়নি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৮ জানুয়ারি। ফলে আপাতত ওবিসি শংসাপত্র নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের রায়ই বহাল রইল। গত ২২ মে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ ২০১০ সালের পর থেকে তৈরি রাজ্যের সব ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দেয়। হাই কোর্টের নির্দেশে প্রায় ১২ লক্ষ সার্টিফিকেট অকেজো হয়ে যায়। উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। ওই মামলার পরবর্তী শুনানি ২৮ জানুয়ারি।