মন্দিরের বাইরে দর্শনার্থীদের ভিড়। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া।
তিরুপতি মন্দিরে টিকিট বিলি ঘিরে বিশৃঙ্খলার কারণে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ছ’জনের। বুধবার সন্ধ্যার এই দুর্ঘটনায় জখমও হয়েছেন অনেকে। ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে ‘বৈকুণ্ঠদ্বার’ দর্শনের টিকিটের জন্য ভক্তেরা জড়ো হওয়ার সময় দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি ঘটে। কিন্তু কী ভাবে ঘটল দুর্ঘটনা? কী ভাবেই বা টিকিট বিলি হচ্ছিল? সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর এক্স হ্যান্ডল থেকে পোস্ট করা ভিডিয়োয় সেই দৃশ্য প্রকাশ্যে এসেছে (যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)।
ভাইরাল সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ‘বৈকুণ্ঠদ্বার’ দর্শনের জন্য টিকিট সংগ্রহের হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে দর্শনার্থীদের মধ্যে। মন্দির চত্বরে টিকিটের জন্য রীতিমতো মারপিট করছেন শত শত ভক্ত। পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবকেরা অনেক চেষ্টা করেও সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না।
সমাজমাধ্যমে আরও বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। বেশ কয়েকটি ভিডিয়োয় উন্মত্ত জনতার উপর পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে দেখা গিয়েছে। একটি ভিডিয়োয় পদপিষ্ট হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া কয়েক জন দর্শনার্থীকে কী ভাবে উদ্ধার করা হচ্ছে, সেই দৃশ্য ধরা পড়েছে।কয়েক জন অসুস্থ মহিলাকে সিপিআর দেওয়ার এবং আহত ব্যক্তিদের অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছে (সেই ভিডিয়োগুলিরও সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) তবে ভিডিয়োগুলি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়েছে। পুরো ঘটনার জন্য প্রশাসনের অব্যবস্থাকেই দায়ী করেছেন নেটাগরিকদের একাংশ।
উল্লেখ্য, ভক্তসংখ্যার নিরিখে তিরুপতি মন্দির দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়। পাশাপাশি, সেখানকার ভিড় সামলানোর ব্যবস্থাপনাও বহুল প্রশংসিত। কিন্তু এ বার সেখানেও ভিড়ের জেরে পদপিষ্ট হওয়ার মতো ঘটনা ঘটল। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, মন্দিরের সামনে ‘বৈকুণ্ঠদ্বার দর্শন’ টিকিটকেন্দ্রের অদূরে বৈরাগী পট্টিতা পার্কে হুড়োহুড়িতে এই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে। তিরুপতি মন্দিরের ১০ দিনের (১০-১৯ জানুয়ারি) বৈকুণ্ঠ একাদশী এবং বৈকুণ্ঠদ্বার দর্শনের টিকিট সংগ্রহের জন্য বুধবার সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইন পড়েছিল ভক্তদের। প্রকাশিত একটি খবরে দাবি, সন্ধ্যার সময় ‘বৈকুণ্ঠদ্বার দর্শন’ টিকিটকেন্দ্রের সামনে লাইনে ছিলেন প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। বৈরাগী পট্টিতা পার্কে টোকেন বিলির ঘোষণার পরে আচমকাই সেখানে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
‘তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম (টিটিডি)’ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বিআর নায়ডু জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই মৃতদের মধ্যে এক জনের দেহ শনাক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালেই তিরুপতি পৌঁছেছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নায়ডু। আহতদের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন তিনি। পুরো বিষয়টি নিয়ে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তিনি বলেন, ‘‘অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতিতে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় আমি ব্যথিত। প্রিয়জনকে যাঁরা হারিয়েছেন তাঁদের প্রতি আমার সমবেদনা। আমি প্রার্থনা করি, আহতেরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। অন্ধ্রপ্রদেশের সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে।’’