RG Kar Protest

আরজি করের বিচার চেয়ে কলেজ স্ট্রিট থেকে মিছিল এল শ্যামবাজারে, রাতভর অবস্থানে জুনিয়র ডাক্তাররা

বৃহস্পতিবার আরজি কর-কাণ্ডের পাঁচ মাস পূর্ণ হয়েছে। সেই উপলক্ষে কলেজ স্কোয়্যার থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিলে হাঁটেন জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। পরে তাঁরা শ্যামবাজারে অবস্থানে বসেছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৪৬
শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান।

শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান। —নিজস্ব চিত্র।

আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় বিচার চেয়ে আবার রাজপথে নামলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। বৃহস্পতিবার আরজি কর-কাণ্ডের পাঁচ মাস পূর্ণ হয়েছে। সেই উপলক্ষে কলেজ স্কোয়্যার থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। জুনিয়র ডক্টর্‌স’ ফ্রন্টের ডাকা সেই কর্মসূচিতে পা মিলিয়েছেন অনেক সাধারণ মানুষও। মিছিলে হেঁটেছেন জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ দেবাশিস হালদার, অনিকেত মাহাতো, আসফাকুল্লা নাইয়া প্রমুখ। মিছিল শেষে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে সারা রাত অবস্থানে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement
আরজি করের ঘটনার বিচার চেয়ে পথে জুনিয়র ডাক্তাররা। বৃহস্পতিবার বিকেলে।

আরজি করের ঘটনার বিচার চেয়ে পথে জুনিয়র ডাক্তাররা। বৃহস্পতিবার বিকেলে। —নিজস্ব চিত্র।

বৃহস্পতিবার আরজি কর-কাণ্ডের বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়েছে শিয়ালদহ আদালতে। সিবিআই এই ঘটনায় এক জনকেই অভিযুক্ত হিসাবে দেখিয়েছে। আরজি করের ঘটনায় একমাত্র অভিযুক্ত ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার, চার্জশিটে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। আদালতে তাঁর সর্বোচ্চ শাস্তির পক্ষেও সওয়াল করা হয়েছে। আগামী ১৮ জানুয়ারি এই মামলায় সাজা ঘোষণা করা হবে। তবে তার আগে সিবিআইয়ের তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের মতে, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার একা নন, আরও অনেকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। কিন্তু তাঁরা পার পেয়ে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার মিছিল থেকেও এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিক্ষোভকারীরা।

বৃহস্পতিবার কলেজ স্কোয়্যার থেকে শ্যামবাজারের পথে জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল।

বৃহস্পতিবার কলেজ স্কোয়্যার থেকে শ্যামবাজারের পথে জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।

বিকেল ৪টের পর কলেজ স্ট্রিট থেকে মিছিল শুরু হয়। শ্যামবাজারে পৌঁছে অবস্থানে বসেন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা। অনেক সাধারণ মানুষও তাঁদের সঙ্গ দিয়েছেন। দেবাশিস অবস্থান মঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘১৮ তারিখ রায় ঘোষণা করবে আদালত। বোঝাই যাচ্ছে, সিবিআইয়ের প্রাথমিক চার্জশিটের ভিত্তিতে অভিযুক্ত সিভিককে দোষী সাব্যস্ত করা হবে। সে যদি জড়িত থাকে, সাজা পাক। কিন্তু এটাই তো পুরো বিষয় নয়। যারা এই ঘটনাকে সুইসাইড বলে চালাতে চাইল, তথ্যপ্রমাণ লোপাট করল, আরও যারা এই ঘটনায় জড়িত, সিএলএসএফ রিপোর্ট, ডিএনএ পরীক্ষা-সহ বিভিন্ন রিপোর্টের যে অসঙ্গতি, তার তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করতে হবে। যত দিন তা না হচ্ছে, তত দিন ন্যায়বিচার পেয়েছি বলে আমরা মনে করছি না। আমাদের আন্দোলন তত দিন চলবে।’’

অপর আন্দোলনকারী আসফাকুল্লা বলেন, ‘‘সিভিককে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। এই ঘটনার মোটিভ কী? জানা দরকার। সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও ক্ষোভ রয়েছে।’’ অনিকেত বলেন, ‘‘এক জনের পক্ষে এই ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়। আরও কারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল, আমাদের কাছে এখনও তা স্পষ্ট নয়। আমাদের আন্দোলন চলবে।’’

বৃহস্পতিবার আদালতের বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হলে নির্যাতিতার বাবা-মা আরও এক বার তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা রাজ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় সংস্থার ‘সেটিং’-এর অভিযোগ তুলেছেন। নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশ যা করেছিল, সিবিআই সেটাই করেছে। ওরা প্রমাণ করতে চায়, সিভিক ভলান্টিয়ার একাই দোষী। আমরা সেটা মনে করি না। একটা জনবহুল হাসপাতাল, সেখানে আমার মেয়ে কর্তব্যরত ডাক্তার। বাইরের কেউ ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ-খুন করছে, হাসপাতালের কেউ জানে না, এটা হতে পারে না। কেউ এটা বিশ্বাস করবে না। আমরা চাই প্রকৃত দোষী শাস্তি পাক। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সঙ্গে আছি আমরা।’’

Advertisement
আরও পড়ুন