এ বারের আইপিএলে ১৪ ম্যাচ খেলে ৪৭৪ রান করেছেন কেকেআরের ব্যাটার রিঙ্কু সিংহ। —ফাইল চিত্র
এ বারের আইপিএলের চমক তিনি। কলকাতা নাইট রাইডার্সের নায়ক হয়ে উঠেছেন। ১৪ ম্যাচে ৪৭৪ রান করেছেন। কেকেআরকে বেশ কয়েকটি ম্যাচ জিতিয়েছেন রিঙ্কু সিংহ। প্রশংসা পেয়েছেন। তাঁকে জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়ারও দাবি করেছেন বেশ কয়েক জন প্রাক্তন ক্রিকেটার। কিন্তু রিঙ্কু নিজের শিকড় ভুলে যাননি। তিনি জানেন, যত ক্ষণ ভাল খেলবেন তত ক্ষণই সবাই তাঁকে মনে রাখবে।
একটি সংবাদপত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রিঙ্কু বলেছেন, ‘‘আমি আগেও এ ভাবেই ব্যাট করতাম। কিন্তু গুজরাতের বিরুদ্ধে ৫ ছক্কা আমার জীবন বদলে দিয়েছে। তার আগে আমাকে কিছু লোক চিনত। ওই ইনিংসের পরে সবাই চিনেছে। কিন্তু আমি কোথা থেকে এসেছি, সেটা আমার মনে আছে। এই প্রশংসা ক্ষণিকের। খারাপ খেললে আজ যারা প্রশংসা করছে, তারাই কাল গালি দেবে।’’
ছোট থেকেই পরিশ্রম করেছেন রিঙ্কু। ক্রিকেট ছাড়া অন্য কিছু বুঝতেন না। তিনি জানতেন, সফল হতে গেলে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। কিন্তু মাঝে একটা সময় তাঁর কেরিয়ার শেষ হতে বসেছিল। অস্ত্রোপচারের পরে আবার ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন কি না সেই চিন্তা মাথায় ঘুরত তাঁর। সেই সময়ে তাঁর মানসিক শক্তি আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কেকেআরের ব্যাটার।
রিঙ্কু বলেছেন, ‘‘তিন বছর আগে আমার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। তিন মাস বিছানায় শুয়ে ছিলাম। তার পরেও ঠিক ভাবে হাঁটতে পারতাম না। খোঁড়াতাম। এক তলা থেকে দোতলায় শৌচাগারে যেতে সব থেকে বেশি কষ্ট হত। সেই সময় ভাবতাম এই ছ’সাত মাসে আমাকে সবাই ভুলে যাবে না তো! আবার খেলতে পারব তো! মনের জোর বাড়িয়েছি। চোটের পরে ওই কয়েক মাস আমাকে মানসিক ভাবে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে।’’
বিশ্রাম শব্দটা জীবন থেকে বাদ দিয়েছেন রিঙ্কু। তাঁর মনে হয়, বিশ্রাম নিলেই তিনি পিছিয়ে পড়ছেন। সেই কারণে কঠিন পরিশ্রম চালিয়ে যেতে চান। রিঙ্কু বলেছেন, ‘‘কয়েক দিন বিশ্রাম নিলেই মনে হয় আমি পিছিয়ে পড়ছি। তাই পরিশ্রম আরও বাড়িয়ে দিই। পরিশ্রম না করলে কী ভাবে নিজেকে ফিট রাখব! আমি নিয়ম মেনে জিম করি, মাঠে দৌড়য়। ব্যাটিং অনুশীলন প্রতিদিন করি। নিজেকে যে কোনও মুহূর্তের জন্য তৈরি রাখি।’’
আইপিএল খেলতে গিয়ে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির পরামর্শ পেয়েছেন তিনি। ধোনি তাঁকে বলেছেন, শুধু নিজের কাজটা করে যেতে। অতিরিক্ত কিছু করার চেষ্টা না করতে। সেটা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলছেন রিঙ্কু। পরিশ্রম করছেন। নিজেকে তৈরি রাখছেন। রিঙ্কু জানেন, ব্যর্থ হলেই ব্যঙ্গ অপেক্ষা করছে। সেটা আর শুনতে চান না তিনি। নিজের শিকড় আঁকড়ে ধরে ক্রিকেট খেলে যেতে চাইছেন কেকেআরের ব্যাটার।