এ বার আইপিএলের আগে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছিলেন যশস্বী। ছবি: আইপিএল।
এ বারের আইপিএলে নতুন ছন্দে দেখা যাচ্ছে রাজস্থান রয়্যালসের ব্যাটার যশস্বী জয়সওয়ালকে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে তাঁর ৬২ বলে ১২৪ রানের ইনিংস তাক লাগিয়ে দিয়েছে ক্রিকেট বিশ্বকে। ছোটবেলার কোচকে যশস্বী আগেই আশ্বাস দিয়েছিলেন বড় রান করার।
ছাত্রের ব্যাটিং দেখে খুশি জ্বালা সিংহ। যশস্বীকে ক্রিকেটার হিসাবে গড়ে তুলেছেন তিনি। রবিবার দুপুরে ছোটবেলার কোচকে ফোন করেছিলেন যশস্বী। জ্বালা বলেছেন, ‘‘দুপুরে যশস্বীর ফোন পেয়েছিলাম। আমার কাছে জানতে চেয়েছিল, মুম্বই-রাজস্থান ম্যাচ দেখতে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে যাব কিনা। খেলা দেখতে যাব জানার পর বলেছিল, ‘স্যর আসবেন অবশ্যই। আজ আপনাকে আমি গর্বিত করব।’ ও কথা রেখেছে। আমি শুধু গর্বিত নই। আমি দারুণ গর্বিত। মুম্বইয়ের মতো বড় দলের বিরুদ্ধে কী দুর্দান্ত শতরান করল। ভীষণ খুশি আমি।’’
মুম্বইয়ে ক্রিকেটার হিসাবে বেড়ে ওঠা যশস্বীর কাছে ওয়াংখেড়ের মাঠ অপরিচিত নয়। আইপিএলের অ্যাওয়ে ম্যাচ ২১ বছরের ব্যাটারের কাছে ছিল ঘরের ম্যাচ। সুযোগ হাতছাড়া করেননি। কিন্তু কী ভাবে এমন আগ্রাসী ব্যাটিং করছেন? জ্বালা জানিয়েছেন প্রিয় ছাত্রের আইপিএলের আগে প্রস্তুতির কথা। তিনি বলেছেন, ‘‘এ বার ওকে একটু অন্য রকম ভাবে তৈরি করতে চেয়েছিলাম। আইপিএলে তিন বছর খেলা হয়ে গিয়েছে ওর। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে টিকে থাকতে হলে বিশেষ দক্ষতা প্রয়োজন। ওকে গোরখপুরে ডেকে নিয়েছিলাম। সিমেন্টের উইকেটে প্লাস্টিকের বলে অনুশীলন করিয়েছি। বলের গতিও অনেক বেশি রেখেছিলাম। বল যশস্বীর দিকে তীব্র গতিতে ছুটে যাচ্ছিল। খুব সুইং করছিল। দু’টো মাঠে অনুশীলন করাতাম। রেলওয়ের মাঠ এবং সেন্ট অ্যান্ড্রুজ মাঠে।’’
প্রস্তুতি পর্ব নিয়ে তিনি আরও বলেছেন, ‘‘শুরুতে যশস্বী বেশ ভয় পেত। প্রচুর বল ওর গায়ে লেগেছে। ও বলেছিল, ‘স্যর শরীরের থেকে দূরে ব্যাট নিয়ে যেতে পারছি না। আমার খেলা খারাপ হয়ে যাবে।’ ওকে বলেছিলাম, শুধু বল মারার দিকে মন দিতে। ৮০ মিটার দূরে বাউন্ডারি লাইন ঠিক করে দিয়েছিলাম। যত বেশি সম্ভব ছয় মারতে বলেছিলাম। প্রতি দিন চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা অনুশীলন করাতাম এ ভাবে। ভাল লাগছে আমার পরিকল্পনা কাজে লেগেছে। যশস্বীর খেলা উন্নত হয়েছে। ওকে বুঝিয়েছি, সেরা ব্যাটার হতে চাইলে সেরা বোলারকেই মারতে হবে।’’
আইপিএলের আগে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে সাফল্য পেয়েছিলেন যশস্বী। ৫২ বলে শতরান করেছিলেন। সেই ইনিংস খেলার পর জ্বালাকে ফোনে জানিয়েছিলেন, নতুন ভাবে ব্যাটিং উপভোগ করছে। জ্বালা তখনই নিশ্চিত হয়ে যান, এ বার আইপিএলে তাঁর ছাত্রের ব্যাটে এমন কিছু ইনিংস দেখা যাবে, যা আগে খেলেননি।