ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ। —ফাইল চিত্র।
সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশ যৌন হেনস্থা, শ্লীলতাহানী এবং উত্যক্ত করার অভিযোগ আনল। তাদের চার্জশিটে সে কথা লেখা রয়েছে। তদন্তের পর বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। ছয় মহিলা কুস্তিগির ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ করেছিলেন।
আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর সাজা হতে পারে ব্রিজভূষণের। দিল্লি পুলিশ সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে। দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে তাতে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ (শালীনতা নষ্ট করার উদ্দেশ্যে আক্রমণ), ৩৫৪এ (যৌন হয়রানি), ৩৫৪ ডি (উত্যক্ত করা) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রাক্তন সহ-সচিব এবং অন্যতম অভিযুক্ত বিনোদ তোমারের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ (শালীনতা নষ্ট করার উদ্দেশ্যে আক্রমণ), ৩৫৪এ (যৌন হয়রানি), ১০৯ (প্ররোচনা) এবং ৫০৬ (অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যে তিনটি ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, তা প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের (৩৫৪ ধারায়) কারাবাস হতে পারে। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে মোট ১০৮২ পাতার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।
তথ্য, প্রমাণের ভিত্তিতে কেন ব্রিজভূষণকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না? দিল্লি পুলিশের ওই আধিকারিক সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘যে অপরাধের সাজা সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, সে ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা বাধ্যতামূলক নয়। তাই এ রকম ক্ষেত্রে আমরা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করি না।’’ অভিযোগকারী ছয় মহিলা কুস্তিগিরের মধ্যে চার জন অডিয়ো-ভিসুয়াল প্রমাণ দিয়েছেন পুলিশকে। দিল্লি পুলিশের ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। প্রয়োজন মতো অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করা হবে আদালতে।
আগামী ১৮ জুলাই ব্রিজভূষণ এবং বিনোদকে আদালতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লির অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হরজিৎ সিংহ জসপাল। সে দিন দুপুর ২.৩০ মিনিটে মামলার শুনানি রয়েছে। এক নাবালিকা কুস্তিগিরকেও হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে। ফলে ‘পকসো’ আইনেও মামলা রুজু হয় তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও পরে সেই নাবালিকার বাবা হেনস্থার অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন। তাই আদালতে ‘পকসো’ আইনে মামলা প্রত্যাহার করার আবেদন করেছিল পুলিশ। কিন্তু দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্টের বিচারক জানিয়েছেন, মামলা নিয়ে রায় দেওয়ার আগে অভিযোগকারী ও ‘নির্যাতিতা’ দু’পক্ষের বয়ান শুনতে চান। তিনি দু’পক্ষকে নোটিসও পাঠিয়েছেন। ছ’বারের সাংসদ ব্রিজভূষণ গত ১২ বছর ধরে সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি পদে রয়েছেন।