পরজীবীর সংক্রমণ থেকে পোষ্যকে বাঁচানোর উপায় জেনে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।
বর্ষার সময়ে কুকুরদের গায়ে পরজীবীর সংক্রমণ বেশি হয়। ছোট ছোট লালচে-কালো পোকা লোমের মধ্যে ঘুরে বেড়ায়। ফলে চুলকানি, লোম ঝরে যাওয়া, ঘা হতে পারে। খুবই ছোট ছোট এই পোকাগুলিকে ঘন লোমের মধ্যে থেকে খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। অথচ এরাই এমন উৎপাত শুরু করে যে, আদরের পোষ্যটিকে কষ্ট পেতে হয়। পোকার কামড়ে জ্বরও আসতে পারে পোষ্যের। তাই পোষ্যেকে অনবরত পা দিয়ে কান চুলকাতে বা নির্দিষ্ট কোনও জায়গায় জিভ দিয়ে চাটতে দেখলে সতর্ক হতে হবে।
কুকুরদের লোমের ভিতরে যে পরজীবীরা বাসা বাঁধে তাদের বলে ‘টিক’। কেবল চুলকানি নয়, পোকার সংক্রমণ হলে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে পোষ্য। ঘন ঘন জ্বর আসতে পারে। সারা শরীরে অস্বস্তি হবে তাদের। অনেক ক্ষেত্রে বমি ও পেটের গোলমাল হতেও দেখা যায়। ওজন কমতে শুরু করবে, পোষ্য কিছু খেতে চাইবে না। এমন লক্ষণ দেখা দিলে একবার রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি।
কী ভাবে পরজীবীর সংক্রমণ থেকে বাঁচাবেন আদরের পোষ্যটিকে?
১) সবচেয়ে আগে নিজের বাড়ি-ঘর পরিচ্ছন্ন রাখুন। পোষ্যের জন্য যে জায়গাটি নির্দিষ্ট করেছেন, সেই জায়গা ফিনাইল দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। পোষ্যের বিছানাপত্রও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
২) এমন জায়গায় পোষ্যের বিছানা রাখুন যেখানে আলো-হাওয়া চলাচল করে। ভিজে, স্যাঁতসেঁতে জায়গায় ওকে রাখবেন না।
৩) বাইরে থেকে এসেই পোষ্যের গায়ে হাত দিয়ে আদর করবেন না। আগে নিজে পরিষ্কার হয়ে নিন, তার পর ওকে ধরবেন। হাত ভাল করে স্যানিটাইজ় করে তবেই পোষ্যের কাছে যাবেন।
৪) পোষ্যকে ভাল করে স্নান করাতে হবে। ছত্রাক এবং পরজীবীর সংক্রমণ রোখার জন্য শ্যাম্পু দিয়ে কুকুরকে স্নান করাতে পারেন। তবে কী ধরনের শ্যাম্পু আপনার পোষ্যের জন্য কিনবেন, তা পশু চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিন। চেষ্টা করুন পোষ্যকে যতটা সম্ভব শুকনো রাখতে। স্নানের পর ভাল করে মুছিয়ে দেবেন। লোম যেন দীর্ঘ সময় ভিজে না থাকে।
৫) কুকুরকে নিয়ে যখন হাঁটতে বেরোবেন, তখন কর্দমাক্ত জায়গা বা জলে ডোবা জায়গা এড়িয়ে চলুন। বাড়ি ফিরে আসার পর কুকুরের থাবাগুলি জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে দেবেন, যাতে ময়লা লেগে না থাকে।
৬) পোষ্যের লোম ভাল করে ব্রাশ করে দিন। পরজীবীগুলি সাধারণত পোষ্যের দেহের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় আটকে থাকতেই ভালবাসে। স্নান করানোর সময় বা লোম আঁচড়ানোর সময় ওই নির্দিষ্ট জায়গাগুলিতে নজর দিলেই এই সমস্যা থেকে অনেকটা রেহাই মিলতে পারে।
৭) পোষ্যের গলায় যদি বেল্ট পরানোর কলার থাকে, তা হলে সেটি খুলে পরিষ্কার করুন। সবসময় ‘কলার’ না পরিয়ে রাখাই ভাল। কারণ ‘কলার’ পরিয়ে রাখা জায়গায় পরজীবীর সংক্রমণ আগে হতে পারে।
৮) খাবার জলের ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে সাবধান থাকতে হবে। বর্ষার সময়ে জলবাহিত বিভিন্ন রোগ ও সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায় কুকুরদের। তাই জল ফুটিয়ে ঠান্ডা করে খেতে দিন পোষ্য কুকুরকে।