Food Adulteration

আপনি যা খাচ্ছেন, তা সুরক্ষিত তো? কোনটা খাঁটি, কিসে ভেজাল, বুঝবেন কী করে?

বাজার থেকে যা যা কিনে আনছেন, তা খাঁটি কি না বুঝবেন কী ভাবে? ভেজাল ধরতে কিছু পরীক্ষা বাড়িতেই করে নিতে পারেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৪ ১১:৩২
How to identify adulterated food items

বাজার থেকে যা কিনে আনছেন খাঁটি কি না বাড়িতে পরীক্ষা করে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।

পাড়ার দোকান থেকে নিয়মিত সর্ষের তেল কিনছেন। তাই দিয়ে বছরের পর বছর আপনার হেঁশেল চলছে। কিন্তু বাজারে আসার আগে তার গুণমান কি নিয়মিত যাচাই হচ্ছে? যে দুধের প্যাকেট কিনে আনছেন, তাতে কতটা দুধ আর কতটা জল, সে অনুপাত ধরবে কে? তাজা দেখে সবুজ সব্জি, রঙিন ফল কিনে আনলেন, কিন্তু বুঝতেও পারলেন না টাটকা দেখাতে তাতে কতটা ভেজাল রঙের প্রলেপ রয়েছে। আটা-ময়দা থেকে চা-কফি, সব্জি থেকে দুধ, এমনকি মশলাপাতি— প্রায় সবেতেই ভেজালের রমরমা। ভাগাড়কাণ্ড ধরা পড়ার পর থেকে মাংস নিয়েও খুঁতখুঁতুনি যাচ্ছে না। কতটুকু খাঁটি খাবার পেটে যাচ্ছে, আর কতটা ভেজাল ঢুকে শরীরের দফারফা করছে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। তা হলে চলুন বাড়িতেই পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া যাক।

Advertisement

ভেজাল ধরতে কী কী করবেন?

১) দুধ— একটু দুধ মাটিতে ঢালুন। যদি দেখেন গড়িয়ে গিয়ে মাটিতে সাদা দাগ রেখে যাচ্ছে, তা হলে এ দুধ খাঁটি। অশুদ্ধ হলে মাটিতে সাদা দাগ পড়বে না। দুধ গরম করতে গেলেই কি হলদেটে হয়ে যাচ্ছে? তা হলে এ দুধ খাঁটি নয়। এতে মিশেছে কার্বোহাইড্রেট। দুধের সমান জল মেশান একটি শিশিতে। এ বার শিশির মুখ বন্ধ করে জোরে ঝাঁকান। অস্বাভাবিক ফেনা হলেই বুঝবেন, দুধে মেশানো আছে ডিটারজেন্ট।

২) মধু— এক গ্লাস জলে এক চামচ মধু ফেলে দেখুন। খাঁটি মধু হলে সবটাই গ্লাসের তলায় গিয়ে জমা হবে। যদি মধুতে সুগার সিরাপ বা অন্য ভেজাল থাকে, তা হলে জলে মিশে যাবে।

৩) গুঁড়ো মশলা— রান্নায় যে গুঁড়ো মশলা ব্যবহার করছেন, তা খাঁটি কি না জানতে ঘরেই কিছু পরীক্ষা করে নিতে পারেন। এমনিতেও গুঁড়ো মশলায় এখন কৃত্রিম রঙের ব্যবহার বেড়েছে। এ নিয়ে সতর্কও করেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। ভারতের এক বিখ্যাত মশলা প্রস্তুতকারক সংস্থার মশলায় পাওয়া গিয়েছে ইথিলিন অক্সাইড। এই রাসায়নিক বেশি মাত্রায় শরীরে ঢুকলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। প্যাকেটজাত মশলা কিনে আনলে এক গ্লাসে জলে এক চামচ গুঁড়ো মশলা ফেলে দেখবেন। হলুদ গুঁড়ো খাঁটি হলে সবটাই জলের নীচে জমা হবে। উপরের জল পরিষ্কার থাকবে। ভেজাল হলে জলটাই ঘোলা হয়ে যাবে। লঙ্কা গুঁড়োর ক্ষেত্রেও তাই। ভেজাল হলে লাল রং ভেসে উঠবে জলের উপরে।

৪) চা/কফি— দিনভর ক্লান্তির পর এক কাপ চা বা কফিতে শান্তি পাই আমরা। দোকান থেকে নামী সংস্থার চা বা কফি কিনে আনছেন ঠিকই, কিন্তু তা কতটা খাঁটি, তা যাচাই করে দেখেছেন কি? ভেজা ব্লটিং পেপারে কিছুটা চা পাতা ফেলে দেখুন। যদি ব্লটিং পেপারে হলদেটে বা কমলা ছাপ পড়ে যায়, তা হলে বুঝতে হবে, চা পাতায় কৃত্রিম রং মেশানো আছে। এক কাপ জলে এক চামচ কফির গুঁড়ো ফেলে দেখুন। কফি খাঁটি হলে জলে ভেসে বেড়াবে। ভেজাল থাকলেই তা মিশতে শুরু করবে।

৫) সব্জি— তুলো জলে ভিজিয়ে বা ভোজ্য তেলে ডুবিয়ে সব্জির গায়ে ঘষতে থাকুন। যদি দেখেন তুলোতে রং উঠছে, তা হলেই বুঝতে হবে কৃত্রিম রং মেশানো হয়েছে সব্জিতে।

৬) ফল— বাজার থেকে কেনা ফল কতটা টাটকা, তা-ও ধরতে পারবেন। ধরুন, পাকা কলা কিনে আনলেন। এ বার কলার গায়ে কিছুটা জল ছিটিয়ে দিন। যদি দেখেন কলার রং বদলে খয়েরি হয়ে যাচ্ছে, তা হলে বুঝতে হবে সেটিকে জোর করে পাকানো হয়েছে। সেই কলায় ক্যালশিয়াম কার্বাইড রয়েছে।

৭) আটা— এক চামচ আটা এক গ্লাস জলে মেশান। আটা খাঁটি হলে চট করে মিশবে না। তলানিতে জমা হবে। ভেজাল হলেই জল ঘোলা হয়ে যাবে।

৮) তেল— সর্ষের তেল কিনে এনে প্রথমে ২-৩ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিন৷ তার পর ফ্রিজ থেকে বার করে যদি দেখেন তেলের খানিকটা জমে সাদা হয়ে গিয়েছে, তা হলে জানবেন সেই তেলে ভেজাল রয়েছে৷ খাঁটি সর্ষের তেল কখনও জমে না। হাতের তালুতে আঙুল দিয়ে সর্ষের তেল ঘষে দেখুন। যদি তেলের রং ছেড়ে যেতে শুরু করে, কোনও অন্য রকম গন্ধ পান, চিটচিটে ভাব অনুভব করেন, বুঝবেন সেই তেল ভেজাল৷

৯) মাখন— একটি চামচে খানিকটা মাখন তুলুন। খাঁটি মাখন চটজলদি গলে যাবে। ভেজাল হলেই সেটি গলতে দীর্ঘ সময় নেবে।

আরও পড়ুন
Advertisement