বায়ুদূষণের ফলে কুকুর, বিড়ালদেরও শ্বাসকষ্ট, ব্রঙ্কাইটিসের মতো নানা সমস্যা দেখা দেয়। ছবি : প্রতীকী
সামনেই দীপাবলি। শব্দদূষণ রুখতে সরকারি তরফে শব্দবাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও, এখনও যত্রতত্র বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে চকোলেট বোম, পটকার মতো বাজি। ক্রমাগত শব্দবাজির ব্যবহার, শিশু বা বয়স্ক মানুষের পাশাপাশি আপনার বাড়ি বা বাড়ির আশপাশে থাকা নিরীহ প্রাণীগুলির জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে।
“বিশেষ করে দীপাবলির সময়, রাস্তার ধারে থাকা কুকুর এবং বিড়ালের মৃত্যুর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। শব্দবাজির আওয়াজ সহ্য করতে না পেরে তাদের দুর্বল হৃদয় আচমকা স্তব্ধ হয়ে যায়,” বলেছেন পশুসুরক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কাবেরী রানা ভরদ্বাজ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতি বছর দীপাবলির সময়ে শব্দবাজির এই তীব্র আওয়াজে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ে ওই অবলা জীবগুলি। বাড়ির পোষ্যদের ক্ষেত্রে একটু হলেও চিন্তা কম। কারণ, ভয় পেলেও তারা বুঝতে পারে যে, তারা নিরাপদ জায়গায় আছে। কিন্তু রাস্তার কুকুর বা বিড়ালদের ক্ষেত্রে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। রাস্তার কুকুর বা বিড়ালদের, চট করে কেউ আশ্রয়ও দিতে চান না।
শব্দবাজির গগনভেদী আওয়াজে ওই নিরীহ প্রাণগুলি ভয়ে ত্রস্ত হয়ে ওঠে। তারা মনে করে, কেউ হয়তো তাদের আক্রমণ করার উদ্দেশেই এমন বীভৎস আওয়াজ করছে। হঠাৎ এই অযাচিত আতঙ্কে হৃদয় কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
কাবেরী বলেছেন, “শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন দিক থেকে আসা এক এক রকম আওয়াজে রাস্তার কুকুর বা বিড়ালগুলি দিক্ভ্রষ্ট হয়ে পড়ে। রাস্তার মধ্যে অস্থির ভাবে দৌড়তে শুরু করে। সেই সময়ে উল্টো দিক থেকে আসা ছুটন্ত কোনও গাড়ির তলায় চাপা পড়েও মৃত্যু হয় তাদের।”
উৎসব শেষ হলেও পরিবেশ থেকে তার ক্ষতিকর প্রভাব কিন্তু সহজে চলে যায় না। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে রাজধানী দিল্লিতে বায়ুদূষণের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বহু গুণ বৃদ্ধি পায়।
পশু চিকিৎসকদের মতে, মানুষের মতো বায়ুদূষণের ফলে কুকুর, বিড়ালদেরও শ্বাসকষ্ট, ব্রঙ্কাইটিসের মতো ফুসফুসের নানা সমস্যা দেখা দেয়। যা সারতে সময় লাগে। এমনকি, ঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে তাদের মৃত্যু পর্যন্ত হয়।