রক্তে থাকা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করলেই হার্টের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে। ছবি : প্রতীকী
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাল না থাকলে ঋতু পরিবর্তনের প্রভাবে শরীরেরও নানা রকম পরিবর্তন ঘটে। ঘরে ঘরেই এই সময়ে সর্দিকাশি বা জ্বরের মতো নানা উপসর্গ দেখা যায়। পাশাপাশি, চুপিসারে বাড়তে থাকে হৃদ্যন্ত্রের জটিলতাও।
যে হেতু এই সময় থেকে একটু ঠান্ডা পড়তে শুরু করে, তাই খাওয়াদাওয়ার পরিমাণ একটু বেশি হলেও বাইরে থেকে তেমন কোনও অস্বস্তি হয় না। এই অনিয়ন্ত্রিত খাওয়াদাওয়ার প্রভাবেই রক্তে থাকা কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে।
রক্তে থাকা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করলেই হার্টের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে, এ কথা প্রায় সকলেই জানেন। রক্তে থাকা ওই চটচটে পদার্থটি যে একেবারেই খারাপ, তা নয়। এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে সাধারণত দু’ধরনের কোলেস্টেরল থাকে, ‘গুড কোলেস্টেরল’ এবং ‘ব্যাড কোলেস্টেরল’।
অনেকের ধারণা, চর্বি জাতীয় খাবার বেশি খেলেই কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। সব ক্ষেত্রে এ ধারণা ঠিক নয়। কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়বে কি না, তা নির্ভর করে প্রত্যেকের শরীরের বিপাক হারের উপর। কারও যদি ডায়াবিটিস থাকে, তা হলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ হল কোলেস্টেরল। হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন।
চিকিৎসকদের মতে, রক্তে উচ্চমাত্রায় ‘এলডিএল’ থাকা ‘এলডিএল’ বা ‘লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ মাত্রা ১০০-র কম থাকলে, মনে করা হয় তা স্বাভাবিক। কিন্তু ১৩০-এর বেশি হলেই হৃদয়ের সঙ্গে যুক্ত প্রধান রক্তবাহীকাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে হৃদ্রোগ সংক্রান্ত যে কোনও রোগের আশঙ্কা অনেক গুণে বৃদ্ধি পায়।
তবে প্রতিদিন কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধের উপর নির্ভরশীল না হয়ে নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং খাদ্য তালিকায় কিছু পরিবর্তন আনলেই কোলেস্টেরলকে বশে রাখা সম্ভব।
প্রতিদিনের রুটিনে কী কী যোগ করলে বিপাক হারে উন্নতি ঘটিয়ে ‘ব্যাড’ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে?
১) প্রতিদিন পাতে রাখতেই হবে সহজপাচ্য ফাইবার জাতীয় কিছু খাবার। নাসপাতি, আপেল, ওটমিল এবং বিনসে থাকা ফাইবার, রক্তের অতিরিক্ত চর্বি শোষণ করতে দেয় না।
২) যেহেতু স্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তে থাকা ‘ব্যাড’ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে, তাই এর বদলে পাতে রাখুন পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। যেমন বাদাম, বিভিন্ন ধরনের বীজ, সামুদ্রিক মাছ খেতে পারেন।
৩) কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের সরাসরি কোনও ভূমিকা না থাকলেও হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখতে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। প্রতিদিন অন্ততপক্ষে আধঘণ্টা শরীরচর্চা করলে ‘গুড’ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে।
৫) পরিমিত মদ্যপান হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল প্রমাণিত হলেও ধূমপানের ক্ষেত্রে তেমন কোনও কথা এখনও পর্যন্ত শোনা যায়নি। তাই ধূমপান ছাড়তে পারলেই ভাল।