High Blood Pressure

বংশে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস থাকলে আপনার কি হতে পারে একই সমস্যা? কী জানালেন চিকিৎসক?

রক্তচাপের সমস্যা ডেকে আনতে পারে হৃদ্‌রোগ কিংবা স্ট্রোক। বিশেষ করে পরিবারে যদি এই সমস্যার ইতিহাস থাকে, তবে অতিরিক্ত সতর্কতা নিতে হবে। আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন চিকিৎসক।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২২ ০৯:০৬
বংশে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে আপনারও কি হতে পারে?

বংশে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে আপনারও কি হতে পারে? ছবি: প্রতীকী

বিজ্ঞান পত্রিকা ল্যানসেটের তথ্য অনুযায়ী, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নির্ণয়ের দিক থেকে ভারতের অবস্থান একেবারেই পিছনের সারিতে। যত জন ভারতীয় রক্তচাপের সমস্যায় আক্রান্ত, তাঁদের মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষ নিজেদের সমস্যা সম্পর্কে অবগতই নন। অথচ রক্তচাপের সমস্যা ডেকে আনতে পারে হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোক। বিশেষ করে পরিবারে যদি এই সমস্যার ইতিহাস থাকে, তবে অতিরিক্ত সতর্কতা নিতে হবে, মনে করালেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক শুভদীপ রক্ষিত।

উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কি বংশানুক্রমিক হতে পারে?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইনকে চিকিৎসক জানান, কিছু ক্ষেত্রে পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চারিত হতে পারে এই রোগ। মূলত দু’ভাবে ঘটে বিষয়টি। কিছু বিরল ক্ষেত্রে সরাসরি বাবা-মায়ের থেকে সন্তানের দেহে সঞ্চারিত হয় এই রোগ। এই বিষয়টি জিনগত। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে পরোক্ষ ভাবেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। যে বিষয়গুলি সচরাচর সমস্যা তৈরি করে, সেগুলিকে ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’ বলে। বাবা-মায়ের থাকলে স্থূলতা, থাইরয়েড কিংবা হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যার মতো রিস্ক ফ্যাক্টরগুলি বিপদ ডেকে আনতে পারে সন্তানের ক্ষেত্রেও। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁদের বাবা-মায়ের মধ্যে এই রিস্ক ফ্যাক্টরগুলি দেখা যায়, সন্তানদের দেহেও এই বিষয়গুলি দেখা দেয়।

কী করণীয়?

যদি বাবা-মায়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তবে কী করতে হবে সন্তানকে? এই প্রশ্নের জবাবে শুভদীপ বলেন, “অল্প বয়সেই যদি বাবা-মায়ের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ধরা পড়ে, তবে সন্তানকে ইসিজি, ইকো, লিপিড প্রোফাইল, থাইরয়েড ও ডায়াবিটিস পরীক্ষা করিয়ে দেখে নেওয়া যেতে পারে।” এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক ‘হাইপারট্রফিক কার্ডিয়ো মায়োপ্যাথি’ নামের একটি সমস্যার কথা উল্লেখ করেন। “এই রোগে হৃদ্‌পেশি ও রক্তবাহের সমস্যা দেখা যায়, ফলে বেড়ে যায় রক্তচাপ। যাঁদের এই সমস্যা রয়েছে, তাঁদের সন্তানকে অবশ্যই ইকো পরীক্ষা করিয়ে দেখে নেওয়া উচিত,” মত চিকিৎসকের।

কখন করতে হবে পরীক্ষা?

এক বার সমস্যা দেখা দিলে শুধু শুধু অপেক্ষা করে লাভ নেই। যদি অল্প বয়সি দম্পতির এ হেন সমস্যা দেখা যায়, তবে সন্তান ছোট হলেও পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে কিছু ক্ষেত্রে ৫ বছর অন্তর পর্যবেক্ষণেও থাকতে হতে পারে। তা ছাড়া যাঁদের বংশে হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক কিংবা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের বয়স ৪০-৪৫ ছুঁলেই করাতে হবে রক্তচাপের পরীক্ষা। এখন চাইলে বাড়িতেও রক্তচাপ মাপার যন্ত্র পাওয়া যায়। তাই অবহেলা না করাই ভাল বলে মত চিকিৎসকের।

বদল আনতে হবে জীবনযাত্রায়

যাঁদের রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জীবনযাত্রায় বদল আনায় জোর দেন চিকিৎসক। খাওয়ার লবণে লাগাম টানা, সপ্তাহে অন্তত তিন দিন ৩০ মিনিট করে শরীরচর্চা করা, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ায় নজর দিতে হবে বলে জানান চিকিৎসক। বাড়িতে যদি উচ্চ রক্তচাপের থেকে তৈরি হওয়া কোনও সমস্যা থেকে মৃত্যুর ইতিহাস থাকে, তবে মাথা ঘোরানো, মাথাব্যথা, বুকে চাপ লাগার সমস্যাকে অবহেলা করতে নিষেধ করেন চিকিৎসক। তবে সতর্ক থাকা মানে আতঙ্কে থাকা নয় তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন
Advertisement