মেকআপ প্রসাধনীর মেয়াদ ক’দিন? ছবি: সংগৃহীত।
মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ নিশ্চয়ই খান না? তা হলে প্রসাধনীর ক্ষেত্রে সেই সচেতনতা নেই কেন? উত্তরটা সহজ। কারণ, বেশির ভাগ মানুষই জানেন না লিপস্টিক, লাইনার, ব্লাশ কিংবা ফাউন্ডেশনের মতো প্রসাধনী ব্যবহার করার নির্দিষ্ট সময়কাল রয়েছে। ফুরোচ্ছে না বলে সে সব জিনিস অনন্তকাল ধরে ব্যবহার করা যায় না।
মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্রসাধনী ব্যবহার করলে কী হবে? রূপটান শিল্পীরা বলছেন, এই মেয়াদ- উত্তীর্ণ প্রসাধনী থেকেই ত্বকে সংক্রমণজনিত সমস্যা হয়। ব্যবহারের মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া কাজল, লাইনার, মাস্কারা থেকে চোখেও কিন্তু সমস্যা হতে পারে। তাই কেনার সময়ে যেমন সতর্ক থাকা প্রয়োজন, তেমন কোনটির মেয়াদ কেমন, সে সম্পর্কেও ব্যবহারের আগে জেনে রাখা ভাল।
মাস্কারা:
চোখের গভীরতা বাড়িয়ে তুলতে অনেকেই পল্লবে মাস্কারা ব্যবহার করেন। এই প্রসাধনীটি খুব বেশি হলে ৪ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া মাস্কারা কোনও ভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। শুকিয়ে যাওয়া মাস্কারা ফেলে না দিয়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তা ব্যবহারযোগ্য করে তোলার চেষ্টা না করাই ভাল। তাতেও চোখে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
আইলাইনার:
চোখের পাতার উপরে আজকাল অনেকেই পেন্সিল লাইনার ব্যবহার করেন। পেনসিল লাইনারের মুখে যদি সাদা রঙের কোনও বস্তু চোখে পড়ে তা হলে সাবধান, ওইটি আসলে ছত্রাক। এমন অবস্থায় কোনও ভাবেই পেনসিলটি চোখের সংস্পর্শে আনা যাবে না। তরল লাইনারের ক্ষেত্রে ব্যবহারের মেয়াদ মোটামুটি মাস ছয়েক। মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্রসাধনীর মধ্যে ব্যাক্টেরিয়া বাসা বাঁধে সহজেই। সেখান থেকে চোখের পাতায় সংক্রমণ হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
ব্লাশ বা আইশ্যাডো:
মুখে লালচে আভা আনার জন্য গালে অনেকেই নিয়মিত ব্লাশ মাখেন। ব্লাশ সাধারণত দু’ধরনের হয়। সিল কাটার পর ক্রিম ব্লাশ সাধারণত বছরখানেক পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। কিন্তু পাউডার ব্লাশের মেয়াদ খুব বেশি দিন থাকে না। বর্ষাকালে খুব সহজেই এই ধরনের ব্লাশের উপর ছত্রাকের আস্তরণ পড়ে। ব্যবহার করার আগে তেমন কিছু দেখলে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। আইশ্যাডোর ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য।
ফাউন্ডেশন:
এখন তো ‘নো মেকআপ’-এর যুগ। পোশাক জমকালো হলেও ভারী মেকআপ করতে এখন অনেকেই পছন্দ করেন না। তাই দাম দিয়ে কেনা ফাউন্ডেশন মেকআপ পাউচে পড়েই থাকে। আলেকালে কখনও যদি মনে হয়, তখন টেনে বার করেন সযত্নে তুলে রাখা সেই প্রসাধনীটি। রূপটান শিল্পীরা বলছেন, এই ধরনের প্রসাধনী ব্যাক্টেরিয়াদের আঁতুড়ঘর। না বুঝে এই ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করলে ত্বকে সংক্রমণ হবেই।
লিপস্টিক:
তরল, ক্রেয়ন বা স্টিক— ঠোঁটরঞ্জনী যেমনই হোক, সেগুলির মেয়াদ থাকে ৬ থেকে ৮ মাস। কিন্তু মুশকিল হল, রোজ ঠোঁটে লিপস্টিক ঘষলেও তা অন্ততপক্ষে বছরখানেক ব্যবহার করা যায়। মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও লিপস্টিকের মায়া কাটানো সহজ নয়। আবার তেমন প্রসাধনী ব্যবহার করলে ঠোঁটে সংক্রমণের ভয়ও থাকে। তাই ব্যবহারের আগে সতর্ক থাকাই শ্রেয়।