গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
প্যারিস অলিম্পিক্সে কুস্তির ফাইনালে উঠেও বিনেশ ফোগাটের বাতিল হয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে এ বার বিতর্কের ঝড় উঠল সংসদে। বিরোধীদের তরফে বৃহস্পতিবার গোটা ঘটনা নিয়ে সংসদের দু’কক্ষে আলোচনার দাবি তোলা হয়। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনধড় সেই দাবি না মানায় বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে, তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন-সহ বিরোধী সাংসদেরা ওয়াকআউট করেন।
বৃহস্পতিবার সংসদের উচ্চকক্ষে (লোকসভা) আলোচনার জন্য তালিকাভুক্ত বিষয়গুলি উত্থাপনের পরেই বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সভাপতি খড়্গে রাজ্যসভায় উঠে দাঁড়িয়ে বিনেশের বাতিল হওয়ার ঘটনা নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘এর নেপথ্যে কেউ আছেন কি না, তা জানা প্রয়োজন।’’ এর পর তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেকও একই দাবি তোলেন। সেই সময় চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় তাঁকে সতর্ক করে বলেন, ‘‘আপনি আসন (অধ্যক্ষের আসন) লক্ষ্য করে চিৎকার করছেন। সভার মধ্যে আপনার আচরণ সবচেয়ে কুৎসিত। আপনার আচরণ নিন্দাজনক। এর পরের বার কিন্তু আপনাকে দরজা দেখিয়ে দেব।’’ এর পরেই আসন ছেড়ে উঠে যান ধনখড়।
ডেরেকের উদ্দেশে চেয়ারম্যান ‘সাসপেন্ড করার হুঁশিয়ারি’ দেওয়ার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীরা একসঙ্গে ওয়াকআউট করেন। এর পর ধনখড় বলেন, ‘‘বিরোধীরা মনে করছেন, অলিম্পিক্স থেকে ফোগাটের মর্মান্তিক বিদায়ে শুধু তাঁদেরই হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। পুরো জাতিই আজ যন্ত্রণাক্লিষ্ট। কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করলে তাঁকে (বিনেশ ফোগাট) সবচেয়ে বেশি অসম্মান করা হবে।’’
প্রসঙ্গত, বুধবার সংসদে বিরোধী সাংসদেরা অভিযোগ করেন, ফাইনালে পৌঁছেও বিনেশের এমন আচমকা বাদ যাওয়াটা সাধারণ ঘটনা হতে পারে না। এর নেপথ্যে নিশ্চিত ভাবেই কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে। এমনকি, তাতে ভারত সরকারেরও হাত থাকতে পারে। এ প্রসঙ্গে নতুন করে আলোচনায় চলে এসেছে কেন্দ্র বনাম কুস্তিগিরদের আন্দোলন। তৎকালীন বিজেপি সাংসদ তথা কুস্তির জাতীয় সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি ব্রিজভূষণ সিংহের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের দাবিতে ধর্নায় বসেছিলেন ভারতীয় কুস্তিগিরেরা। দিল্লি পুলিশ তাঁদের জোর করে তুলে দিলে রাস্তায় পদক ফেলে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তাঁরা। সেই দলে ছিলেন বিনেশও। ঘটনাচক্রে, বিনেশ প্যারিস অলিম্পিক্সে কুস্তির ৫০ কিলোগ্রাম বিভাগের ফাইনালে পৌঁছনোর পরেই নতুন করে আলোচনায় চলে এসেছিল কেন্দ্র বনাম কুস্তিগিরদের সেই আন্দোলনের কথা।