অনিল সিংহ। মঙ্গলবার কেদারনাথে ভেঙে পড়া হেলিকপ্টারের পাইলট।
মেয়ের শরীর খুব একটা ভাল নেই। খবরটা পেয়েছিলেন স্ত্রীর কাছ থেকেই। তাই সোমবার স্ত্রীকে ফোন করে মেয়ের শরীরের খবর নেন অনিল সিংহ। ফোন ধরতেই স্ত্রীকে মেয়ের শরীরের কথা জানতে চেয়ে অনিল বলেছিলেন, “ওর ভাল করে দেখাশোনা করো। ওর শরীর বিশেষ ভাল নেই।”
উত্তরাখণ্ড থেকে মুম্বইয়ে স্ত্রীর কাছে ফোন গিয়েছিল সোমবার। তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই আবারও ফোন পেলেন অনিলের স্ত্রী শিরিন অনিন্দিতা। এ বার ফোনে উল্টো দিক থেকে অনিন্দিতাকে জানানো হয়, কেদারনাথে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অনিলের। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধান, আর তাতেই যেন সব কিছু হিসাব ওলটপালট হয়ে গিয়েছে অনিন্দিতার।
কর্মসূত্রে মেয়ে ফিরোজাকে নিয়ে মুম্বইয়ে থাকেন অনিন্দিতা। পেশায় তিনি লেখক। চলচ্চিত্র নিয়ে লেখালেখি করেন। অন্ধেরির অভিজাত হাউজিং সোসাইটিতে থাকেন তাঁরা। অনিল আদতে পূর্ব দিল্লির শাহদরার বাসিন্দা। কিন্তু গত ১৫ বছর ধরে অন্ধেরিতেই রয়েছেন। স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে অনিন্দিতা বলেন, “সোমবার শেষ কথা হয়েছিল অনিলের সঙ্গে। আমাদের মেয়ের শরীর ভাল নেই। ওকে ভাল ভাবে দেখাশোনা করার জন্য বলেছিল।” তার পরই মঙ্গলবার অনিলের মৃত্যুর খবর পান অনিন্দিতা। গত সেপ্টেম্বরেই আরিয়ান অ্যাভিয়েশনের পাইলট হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন অনিল। সেনায় পাইলটের কাজ করতেন তিনি।
#WATCH | Uttarakhand: A helicopter carrying Kedarnath pilgrims from Phata crashes, casualties feared; administration team left for the spot for relief and rescue work. Further details awaited pic.twitter.com/sDf4x1udlJ
— ANI (@ANI) October 18, 2022
স্বামীর মৃত্যুতে কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই অনিন্দিতার। তাঁর কথায়, “এটি একটি দুর্ঘটনা। কারও বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই।” তিনি আরও জানান, পাহাড়ি এলাকায় ঘন ঘন আবহাওয়া বদলে যায়। দুর্যোগের কবলে পড়তে হয়। উত্তরাখণ্ড পুলিশ সূত্রে খবর, দৃশ্যমানতা খারাপ থাকার জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ডায়রেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) এই দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছে।
পাইলট অনিলের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই তাঁর শেষকৃত্য হবে। তাই মেয়েকে নিয়ে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন অনিন্দিতা।
মঙ্গলবার আরিয়ান অ্যাভিয়েশনের ছয় আসনের একটি হেলিকপ্টার বেল ৪০৭ (ভিটি-আরপিএন) তীর্থযাত্রীদের নিয়ে কেদারনাথ মন্দির থেকে গুপ্তকাশীর দিকে যাচ্ছিল। পৌনে ১২টা নাগাদ গরুড়চট্টিতে দেব দর্শিনীর কাছে সেটি ভেঙে পড়ে পাইলট-সহ সাত জনের মৃত্যু হয়।