Smart Phone

স্মার্টফোন কেনার জন্য রক্ত বিক্রি করতে গেল কিশোরী! হইচই কাণ্ড বালুরঘাট হাসপাতালে

মেয়ে রক্ত বিক্রি করছে শুনে ছুটে এসেছিলেন বাবা। তাঁর কথায়, ‘‘একটা ছোট মোবাইল ছিল বাড়িতে। কিন্তু স্মার্ট ফোনের কথা আমাকে কখনও জানায়নি মেয়ে। ও কার কথা শুনে রক্ত বিক্রি করতে এল তা বুঝতে পারছি না।’’

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২২ ১০:৩৯
রক্ত বিক্রি করে ফোন কেনার টাকা জোগাড় করতে চায় নাবালিকা!

রক্ত বিক্রি করে ফোন কেনার টাকা জোগাড় করতে চায় নাবালিকা! —প্রতীকী চিত্র।

একটা স্মার্টফোনের শখ ছিল দীর্ঘ দিনের। প্রতিবেশীর মাধ্যমে অনলাইনে অর্ডারও দেওয়া হয়ে গিয়েছে শখের মুঠোফোনের। কিন্তু টাকা জোগাড় হবে কী ভাবে? সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে নিজের রক্ত বিক্রি করে ফোন কেনার সিদ্ধান্ত নেয় কিশোরী। গুটিগুটি পায়ে হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে পৌঁছেও গিয়েছিল সে। কিন্তু ১৭ বছরের একটি মেয়ে ‘রক্তদান’ করতে এসেছে দেখে সন্দেহ হয় হাসপাতালের কর্মীদের। শেষে তাকে আটক করে তুলে দেওয়া হয় বালুরঘাট চাইল্ডলাইনের হাতে। সোমবার এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল চত্বরে।

রক্ত বিক্রি আইনত নিষিদ্ধ করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু কিশোরীর রক্ত বিক্রি করার কারণ শুনে চমকে যান হাসপাতালের কর্মীরা। চাইল্ডলাইনের কর্মীদের মাধ্যমে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোরীর বাড়িতে খবর পৌঁছয়। পরে চাইল্ডলাইনের তরফে চাইল্ড ওয়েলফেয়ারের কাছে ওই নাবালিকাকে কাউন্সেলিংয়ের জন্য পাঠানো হয়। মঙ্গলবার মেয়ের সঙ্গে তার বাবা-মায়েরও কাউন্সেলিং হয়। পরে তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়।

Advertisement

এ নিয়ে বালুরঘাটে রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্রের কাউন্সিলর কণককুমার দাস বলেন, ‘‘সকালে একটি নাবালিকা এসে বলে রক্ত বিক্রি করতে এসেছি। যা শুনে কর্মীরা হতবাক হয়ে যান। এর পরে তাকে ঘরের ভেতরে বসিয়ে কথা বলা হয়। সে রক্ত বিক্রির বিভিন্ন কারণ বলতে থাকে। শেষে বোঝা যায়, মোবাইলের টাকা জোগাড় করতেই রক্ত বিক্রি করতে এসেছে মেয়েটি। আমরা চাইল্ডলাইনে খবর দিই। তারা এসে মেয়েটিকে নিয়ে যায়।’’ চাইল্ডলাইনের দায়িত্ব থাকা রীতা মাহাতো বলেন, ‘‘ওই নাবালিকাকে কাউন্সেলিং করে জানতে পেরেছি, সে মোবাইল কেনার টাকা জোগাড় করতে রক্ত বিক্রি করতে গিয়েছিল। কেউ ওকে খারাপ বুদ্ধি দিয়েছে। তাই করদহ থেকে বালুরঘাটে চলে আসে। আমরা মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। মেয়েটিকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ারে পাঠানোর কথা ভাবা হয়েছে।’’

মেয়ে রক্ত বিক্রি করছে শুনে ছুটে এসেছিলেন বাবা। তাঁর কথায়, ‘‘একটা ছোট মোবাইল ছিল বাড়িতে। কিন্তু স্মার্টফোনের কথা আমাকে কখনও জানায়নি মেয়ে। ও কেন আর কারই বা কথা শুনে রক্ত বিক্রি করতে এল তা বুঝতে পারছি না।’’

দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ওই ছাত্রীর বাবা সব্জি বিক্রেতা। মা শারীরিক ভাবে খুব অসুস্থ। এ ছাড়া তার একটি ভাই আছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ছাত্রী জানিয়েছে, প্রতিবেশী এক জনের মোবাইল থেকে একটি স্মার্ট ফোনের অর্ডার দিয়েছে সে। এই সপ্তাহেই সেই মোবাইল আসার কথা। কিন্তু মোবাইলে টাকা জোগাড় করতে সমস্যায় পড়েছিল। সে বলে, ‘‘ভেবেছিলাম রক্ত দিলে টাকা পাওয়া যায়। তাই সোজা করদহ থেকে বাসে চেপে বালুরঘাট হাসপাতালে আসি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement