আন্দোলনকারীদের পাশে সিপিএম নেত্রী দীপ্সিতা ধর এবং বিজেপি নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। ফাইল চিত্র।
দেড় দিন ধরে সল্টলেকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কার্যালয়ে চলছে টেট উত্তীর্ণদের আন্দোলন। প্রতিবাদীদের দাবি, নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত নড়বেন না। শুরু করেছেন রিলে অনশন। পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছেন, তাঁদের এই আন্দোলন ‘অন্যায্য’। এর নেপথ্যে রাজনৈতিক ইন্ধনও দেখছেন তিনি। তার মধ্যেই আন্দোলনস্থলে এসে প্রতিবাদীদের সঙ্গে দেখা করলেন বিজেপি নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল, সিপিএম নেত্রী দীপ্সিতা ধর এবং সৃজন ভট্টাচার্য। অনশনের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এক আন্দোলনকারী।
সোমবার থেকে সল্টলেকের আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র ভবন এলাকায় নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করছেন টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা। মূলত একটি হাসপাতালের সামনের রাস্তাতেই অবস্থান বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। মাইকিং করে পুলিশ তাঁদের বার বার উঠে যাওয়ার কথা বলেছে। পুলিশের বক্তব্য, হাসপাতালের সামনে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। সেটি সাইলেন্ট জোন, অর্থাৎ শব্দ করা যায় না। এর পরেই আন্দোলনকারীরা জলের বোতল, বিস্কুটের প্যাকেট ফেলে দেন। জানিয়ে দেন, তাঁরা অনশন করবেন। অনশনের কারণে এক জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে বিধাননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওআরএস খাওয়ানোর চেষ্টা করা হলেও খাননি ওই আন্দোলনকারী।
মঙ্গলবার পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল সাংবাদিক সম্মেলনে করে আন্দোলনকারীদের দাবি ‘অন্যায্য’ বলার পরেই তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যান বিজেপি নেত্রী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। তিনি বলেন, ‘‘এই নিয়ে মামলার কাগজ দেখব। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মামলা সংক্রান্ত আন্দোলন করব, যাতে তাঁরা ন্যায়বিচার পান।’’
আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মঙ্গলবার সাক্ষাৎ করতে যান সিপিএম নেতা সৃজন এবং দীপ্সিতা। সৃজন বলেন, ‘‘পর্ষদের সভাপতি হয়ে যিনিই বসছেন, জেলে চলে যাচ্ছেন। এখন যিনি বসেছেন, মঙ্গলবার যা বলেছেন, তিনিও যে জেলে চলে যাবেন না, নিশ্চয়তা নেই।’’ এর পরেই বাম নেতার কটাক্ষ, রাজ্য সরকার আসলে স্বচ্ছ শিক্ষক নিয়োগের পথে যেতে চাইছে না। তাঁর কথায়, ‘‘যোগ্য সকল প্রার্থীকে নিয়োগ করলেও পদ খালি থাকে। সরকারের না বোঝার কারণ নেই। শিক্ষকদের যে মাইনে দিতে হবে, সরকার তা না দিয়ে মদ-মাংসে খরচ করবে। তাই স্বচ্ছ শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যেতে চাইছে না।’’ দীপ্সিতা বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীদের পাশে রয়েছি। যত দিন ওরা আন্দোলন চালাচ্ছে, আমরা রয়েছি।’’
মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে গৌতম জানান, ২০১৪ সালের টেটের প্রেক্ষিতে যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা গত দু’বার ইন্টারভিউতে অংশ নিয়েও উর্ত্তীর্ণ হতে পারেননি। তাই তাঁদের আবার ২০১৭ সালের প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। গৌতম এ-ও বলেন, ‘‘চল্লিশ বছর বয়সি টেট- উর্ত্তীর্ণদের ক্ষেত্রে বোর্ডের কিছু করার নেই। আইন সংশোধন করতে পারে রাজ্য। শিক্ষা দফতরে কথা বলছি। এ নিয়ে বোর্ডের কিছু করার নেই।’’