সমাজমাধ্যমে নিজের ‘অন্য রূপ’ তৈরি করে রেখেছিলেন আফতাব। —ফাইল ছবি
প্রেমিকার দেহ কেটে ফ্রিজে ভরে রেখেছিলেন আফতাব পুনাওয়ালা। তাঁর কীর্তি ফাঁস হয়েছে দীর্ঘ ৬ মাস পর। কিন্তু সমাজমাধ্যমে নিজের ‘অন্য রূপ’ তৈরি করে রেখেছিলেন তিনি। যা দেখে বোঝার উপায় নেই, তিনি আদতে কতটা ‘নৃশংস খুনি’ হয়ে উঠতে পারেন।
আফতাবের ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, সেখানে ‘উদার’, ‘নারীবাদী’ হিসাবে নিজের সম্পর্কে একটি ধারণা তৈরি করে রেখেছিলেন তিনি। এমনকি আফতাব নিজেকে এলজিবিটিকিউ সমর্থক হিসাবেও দেখিয়েছিলেন। তাঁর প্রোফাইল ঘাঁটলে মনে হবে, তিনি এক জন পরিবেশপ্রেমী। ২০১৭ সালে আফতাব ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলেন, যেখানে মুম্বইয়ের আবহাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। অ্যারে জঙ্গল কেটে মেট্রো পরিষেবা বর্ধিত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল তৎকালীন উদ্ধব ঠাকরে সরকার। সেই প্রসঙ্গে জঙ্গল কাটার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে একটি পিটিশন দেওয়ার জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন আফতাব। ফেসবুকে সকলের কাছে তা নিয়ে সমর্থন চেয়ে পোস্ট করেছিলেন।
এর আগে ২০১৬ সালে আফতাবের একটি পোস্টে জল সংরক্ষণের বার্তা ছিল। জল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানিয়ে ৪০টি ছবি সমন্বিত একটি প্রতিবেদনের লিঙ্ক পোস্ট করেছিলেন আফতাব। ২০১৫ সালে আফতাবের একটি পোস্ট বলছে, কালীপুজোয় বাজি ফাটানো উচিত নয়।
২০১৫ সালেই আফতাবের আরও একটি পোস্টে দেখা যায়, মহিলাদের উপর অ্যাসিড হামলার বিরোধিতা করা হয়েছে। এ ছাড়া, এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের সমর্থনে এক বার নিজের ফেসবুক প্রোফাইলের মূল ছবিতে রামধনু রঙের প্রলেপ লাগিয়েছিলেন আফতাব।
শ্রদ্ধা ওয়ালকর খুনের ঘটনায় আফতাবকে শনিবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শ্রদ্ধার সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই প্রেমিকাকেই শ্বাসরোধ করে খুন করেন। পরে তাঁর দেহ কেটে ফেলেন টুকরো টুকরো করে। মোট ৩৫টি টুকরো করা হয় শ্রদ্ধার দেহের। খুনের পর ৩০০ লিটারের একটি নতুন ফ্রিজ কিনে এনেছিলেন আফতাব। পচন আটকাতে শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলিকে প্যাকেটে ভাল করে মুড়ে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন ফ্রিজে। প্রতি দিন রাতে একটি করে দেহাংশ ফ্রিজ থেকে বার করতেন তিনি। নিকটবর্তী জঙ্গলে সেগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসতেন। ১৮ দিন এমন করেছিলেন আফতাব। তাঁর কীর্তি প্রকাশ্যে আসতেই শিউরে উঠেছে গোটা দেশ।