প্রেমিকাকে খুন করে দেহের টুকরো ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলেন আফতাব আমিন পুণাওয়ালা। দিল্লির সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর কার্যত তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। আফতাবের নৃশংসতায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ।
ছবি: সংগৃহীত।
দিল্লি পুলিশ এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেল। তাদের দাবি, প্রেমিকা শ্রদ্ধার টুকরো টুকরো দেহাংশ ফ্রিজে রেখে আফতাব অন্য মেয়েদের সঙ্গে একই বাড়িতে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন। শ্রদ্ধাকে খুনের পর একাধিক মহিলাকে তিনি বাড়িতে এনেছেন বলেও দাবি।
ছবি: সংগৃহীত।
একটি অনলাইন ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে নানা মহিলার সঙ্গে আফতাবের পরিচয় হত। তাঁদের সঙ্গে গল্প করে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করতেন। তার পর সেই সব মহিলাদের ডাকতেন বাড়িতে।
ছবি: সংগৃহীত।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, মহিলাদের বাড়িতে ডেকে এনে উদ্দাম যৌনতায় লিপ্ত হতেন আফতাব। গত কয়েক মাসে নানা মহিলার সঙ্গে ওই বাড়িতেই তাঁর শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।
ছবি: সংগৃহীত।
পুলিশ সূত্রে খবর, যে মহিলারা আফতাবের সঙ্গে সময় কাটাতে তাঁর বাড়িতে আসতেন, শ্রদ্ধার খুন সম্পর্কে তাঁদের কোনও ধারণা ছিল না। বাড়িতে নতুন ফ্রিজ কিনেছিলেন আফতাব। ঘরের এক কোণে সেই ফ্রিজ রাখা থাকত।
ছবি: সংগৃহীত।
ফ্রিজের ভিতর একাধিক প্যাকেটে মুড়ে আফতাব রেখে দিয়েছিলেন প্রেমিকার দেহের নানা টুকরো। শ্রদ্ধার কাটা মাথাও ছিল ওই ফ্রিজে। সুকৌশলে সেই ফ্রিজের কাছ থেকে তিনি সঙ্গীদের দূরে রাখতেন।
ছবি: সংগৃহীত।
শুধু মহিলারাই নন, আফতাবের বন্ধুবান্ধবও আসতেন তাঁর বাড়িতে। তাঁরা সকলেই দেখতে পেতেন, ঘরে ঘরে অনেক ধূপ জ্বলছে। চড়া সুগন্ধি ছড়িয়ে রাখা হয়েছে চারদিকে। তবে কেউ কখনও স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি বাড়িতে মৃতদেহ লুকিয়ে রেখেছেন আফতাব।
ছবি: সংগৃহীত।
দিল্লি পুলিশের দাবি, শ্রদ্ধাকে চলতি বছরের মে মাসে খুন করা হয়েছিল। মুম্বই থেকে দিল্লিতে চলে আসার মাস খানের পরেই প্রেমিকা তথা লিভ ইন সঙ্গীকে মেরে ফেলেন আফতাব।
ছবি: সংগৃহীত।
কেন শ্রদ্ধাকে খুন? পুলিশের প্রশ্নের মুখে আফতাব জানিয়েছেন, শ্রদ্ধা তাঁকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু তিনি আদতে লিভ ইন সম্পর্কেই থাকতে চাইতেন। এই নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত। তার জেরেই খুন করেছেন তিনি।
ছবি: সংগৃহীত।
পুলিশ জানতে পেরেছে, ডেটিং অ্যাপে মেয়েদের সঙ্গে আলাপ জমানো, সম্পর্ক তৈরি করার স্বভাব আফতাবের আগে থেকেই ছিল। তা জানতে পেরেছিলেন শ্রদ্ধাও। সেই নিয়েও দু’জনের মধ্যে বিবাদ চরমে পৌঁছেছিল।
ছবি: সংগৃহীত।
পুলিশি জেরার মুখে আফতাব পাল্টা দাবি করেছেন, একই ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করতেন শ্রদ্ধা। তিনিও ওই অ্যাপের মাধ্যমে অন্য ছেলেদের সঙ্গে মিশতেন। শ্রদ্ধাকে খুন করার পর তিনি যে অন্য মেয়েদের ডেকে ওই একই বাড়িতে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন, তা পুলিশের কাছে নিজেই স্বীকার করেছেন আফতাব।
ছবি: সংগৃহীত।
শ্রদ্ধাকে শ্বাসরুদ্ধ করে খুন করেছিলেন আফতাব। তার পর প্রেমিকার দেহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে টুকরো টুকরো কাটেন তিনি। মোট ৩৫টি টুকরো করা হয় শ্রদ্ধার দেহের।
ছবি: সংগৃহীত।
খুনের পর ৩০০ লিটারের একটি নতুন ফ্রিজ কিনে এনেছিলেন আফতাব। শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলিকে প্যাকেটে ভাল করে মুড়ে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন ফ্রিজে। পচন আটকাতেই ফ্রিজ কিনেছিলেন তিনি।
ছবি: সংগৃহীত।
প্রতি দিন রাত ২টো বাজলেই ফ্রিজ খুলতেন আফতাব। প্রেমিকার দেহের টুকরো একটি একটি করে তুলে নিতেন। তার পর নিকটবর্তী জঙ্গলে গিয়ে টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসতেন, প্রতি দিন একটি করে।
ছবি: সংগৃহীত।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শ্রদ্ধাকে খুনের পর গুগ্লে আফতাব সার্চ করেছিলেন, কী ভাবে রক্ত পরিষ্কার করতে হয়। অ্যানাটমি বা শরীরতত্ত্ববিদ্যা নিয়েও ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করেছিলেন তিনি। মানুষের দেহ টুকরো টুকরো করে কাটা নিয়ে তাঁর গুগ্লে সার্চ রয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত।
পুলিশের কাছে আফতাব জানিয়েছেন, আমেরিকার জনপ্রিয় অপরাধমূলক ওয়েবসিরিজ ‘ডেক্সটার’ দেখে শ্রদ্ধাকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। ১৮ মে খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেন।
ছবি: সংগৃহীত।
আফতাবকে শনিবার গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। আপাতত হাজতে দিন কাটছে তাঁর। তাঁকে সর্বক্ষণ সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারিতে রাখা হয়েছে। হাজতে তাঁর কক্ষের বাইরে সর্বক্ষণ থাকছেন দু’জন পুলিশ কর্মী।
ছবি: সংগৃহীত।
মনোবিজ্ঞানীদের একাংশ দাবি করছেন, আফতাব আদতে সাইকোপ্যাথ। তিনি বিশেষ এক প্রকার মানসিক বিকৃতির শিকার। হয়তো শ্রদ্ধার আগেও আরও খুনের নজির রয়েছে তাঁর। স্বাভাবিক মানসিক পরিস্থিতিতে এমন কাণ্ড ঘটানো সম্ভব নয় বলেই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
ছবি: সংগৃহীত।
আফতাবকে ভালবেসে তাঁর সঙ্গে ঘর ছেড়েছিলেন শ্রদ্ধা। এপ্রিল মাসে মুম্বই ছেড়ে তাঁরা দিল্লিতে চলে এসেছিলেন। সেখানে এক মাস কাটতে না কাটতেই এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড।
ছবি: সংগৃহীত।
আফতাবের মোবাইল পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মোবাইল থেকে আরও অনেক তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ছবি: সংগৃহীত।
আফতাবের ফেসবুক থেকে জানা যাচ্ছে, সেন্ট ফ্রান্সিস হাই স্কুল, ভাসাই থেকে পড়াশোনা করেছেন। মুম্বইয়ের এলএস রাহেজা কলেজ থেকে এর পর পাশ করেন।
ছবি: সংগৃহীত।
হাতে ‘ফেথ’ লেখা ট্যাটু রয়েছে। একটি পোস্টে লেখা ‘হেডস আপ, স্টে স্ট্রং, ফেক স্মাইল, মুভ অন।’
ছবি: সংগৃহীত।
ফেসবুক প্রোফাইলে শ্রদ্ধা বাদে অন্য বহু মেয়ের সঙ্গে তাঁর ছবি রয়েছে। পুলিশ তাঁদের সন্ধানে রয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত।
দক্ষিণ দিল্লির অতিরিক্ত ডিসিপি-১ অঙ্কিত চৌহান বলেছেন, মুম্বইতে একটি ‘ডেটিং অ্যাপের’ মাধ্যমে পরিচয় হয়েছিল শ্রদ্ধা এবং আফতাবের। তাঁরা তিন বছর ধরে একত্রবাস করছিলেন এবং দিল্লিতে চলে গিয়েছিলেন। দিল্লিতে চলে যাওয়ার পর পরই, আফতাবকে বিয়ের কথা বলতে থাকেন শ্রদ্ধা। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হত এবং তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেত। এর পর ১৮ মে আফতাব নিজের মেজাজ হারিয়ে শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন।
ছবি: সংগৃহীত।
ওয়েব সিরিজ ‘ডেক্সটার’ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রদ্ধার মৃতদেহগুলি ৩৫ টুকরো করেন অভিযুক্ত আফতাব। এর পর ছতরপুর ছিটমহলের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় সেই দেহ টুকরোগুলি ফেলে দেন। দিল্লি পুলিশ শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করেছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত।