এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার এবং মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার। —ফাইল চিত্র।
কাকা বনাম ভাইপোর দ্বৈরথে এনসিপিতে ‘গৃহযুদ্ধ’ চরমে পৌঁছল। দলের অন্দরে ক্ষমতা দখলের লড়াই শুরু হয়ে গেল এনসিপিতে। যদিও শরদ পওয়ারই এনসিপির সভাপতি বলে সোমবার জানিয়ে দিলেন অজিত পওয়ার। ভাইপোর বিদ্রোহে কড়া পদক্ষেপ করেছেন শরদ পওয়ার। একদা ‘ঘনিষ্ঠ সাংসদ প্রফুল্ল পটেলকে দল থেকে বহিষ্কার করে দিলেন এনসিপি প্রধান। গত মাসেই প্রফুল্লকে দলের কার্যনির্বাহী সভাপতি পদে নিযুক্ত করেছিলেন পওয়ার। রবিবার দুপুরে অজিতের নতুন বিদ্রোহে সে দলে ‘গৃহযুদ্ধ’ শুরু হয়েছে। অজিতকে সঙ্গ দিয়েছেন প্রফুল্ল। আর তার পরেই সোমবার দলবিরোধী কাজের অভিযোগে পটেলকে দল থেকে ছেঁটে ফেললেন ‘মরাঠা স্ট্রংম্যান’। পটেলের পাশাপাশি দল থেকে সরানো হয়েছে লোকসভার সাংসদ সুনীল তটকরেকেও। তাঁর কন্যা অদিতি রবিবার অজিতের সঙ্গেই শপথগ্রহণ করেছিলেন। ওই দুই এনসিপি নেতাকে অবিলম্বে বহিষ্কার করার দাবি জানিয়েছিলেন পওয়ার-কন্যা সুপ্রিয়া সুলে।
সোমবার টুইটারে পওয়ার লিখেছেন, ‘‘ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) সভাপতি হিসাবে দলবিরোধী কাজের জন্য সুনীল তটকরে এবং প্রফুল্ল পটেলকে দল থেকে সরানো হল।’’ এনসিপি প্রধানের সিদ্ধান্তের পাল্টা পটেল ঘোষণা করেছেন, জয়ন্ত পাতিলকে সরিয়ে এনসিপির রাজ্য সভাপতি করা হচ্ছে তটকরেকে। তাঁকে অজিত পওয়ার নিয়োগ করেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। ফলে এনসিপির অন্দরে কাকা বনাম ভাইপোর সরাসরি লড়াই তীব্র হল বলেই মনে করা হচ্ছে। শিবসেনার মতো এ বার এনসিপির রাশ কার হাতে থাকবে, সেই নিয়েও দু’পক্ষের দ্বৈরথ জোরদার হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এনসিপি সভাপতি হিসাবে শরদের উপরই আস্থা রাখার বার্তা দিয়েছেন অজিত।
রবিবার দুপুরে হঠাৎই অনুগামী বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে রাজভবনে যান অজিত। তার পরই হাত মেলান শিন্ডে-বিজেপি সরকারের সঙ্গে। উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন পওয়ারের ভাইপো। তাঁর সঙ্গে আরও আট এনসিপি বিধায়ক শপথগ্রহণ করেছেন। তাঁরা হলেন, ছগন ভুজবল, দিলীপ ওয়ালসে পাতিল, অদিতি তটকরে, ধনঞ্জয় মুন্ডে, হাসান মুশারিফ, ধরমরাজ বাবারাও আতরাম, সঞ্জয় বাঁসোদে এবং অনিল ভাইদাস পাতিল। অজিত দাবি করেছেন, এনসিপির ৫৩ জন বিধায়কের মধ্যে ৪৩ জনের সমর্থন রয়েছে তাঁর কাছে। বস্তুত, দলত্যাগ আইনের হাত থেকে রেহাই পেতে অজিতের প্রয়োজন ৩৬ জন বিধায়কের সমর্থন। অজিত এ-ও জানিয়েছেন, এনসিপিতে কোনও ভাঙন ঘটেনি। আগামী সব নির্বাচনে তাঁরা এনসিপি-র নাম এবং প্রতীক ব্যবহার করবেন। এই ঘটনার পর পরই পওয়ার জানিয়ে দিয়েছিলেন, যাঁরা দলবিরোধী কাজ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। সোমবার সেই পদক্ষেপ করে ফেললেন পওয়ার।
প্রফুল্লদের সরানোর আগে আরও তিন দলীয় নেতাকে বহিষ্কার করেছে এনসিপি। তাঁরা হলেন, মুম্বই ডিভিশনালের এনসিপি প্রধান নরেন্দ্র রাঠৌর, দলের আকোলা সিটি জেলা প্রধান বিজয় দেশমুখ এবং শিবাজীরাও গারজে। তাঁরা সকলেই বিধায়ক। পটেল এবং টটকারের মতো ওই তিন জনও রবিবার অজিতের সঙ্গী হয়ে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। অজিত-সহ নয় বিধায়কের পদ খারিজের দাবি জানিয়েছে এনসিপির শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি।