অজিত পওয়ার এবং শরদ পওয়ার। —ফাইল চিত্র।
ভাইপোর বিদ্রোহের পাল্টা পদক্ষেপ করার কাজ শুরু করে দিলেন শরদ পওয়ার। তিন এনসিপি নেতাকে বহিষ্কার করলেন দলের সভাপতি। তাঁরা সকলেই বিধায়ক। রবিবার মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে অজিত পওয়ারের শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ওই তিন এনসিপি নেতা। সোমবারই তাঁদের দল থেকে সরিয়ে দিলেন ‘মরাঠা স্ট্রংম্যান’।
মুম্বই ডিভিশনালের এনসিপি প্রধান নরেন্দ্র রাঠৌর, সেই দলের আকোলা সিটি জেলা প্রধান বিজয় দেশমুখ এবং শিবাজীরাও গারজেকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ওই তিন জনই রবিবার অজিতের সঙ্গী হয়ে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। অজিত-সহ নয় বিধায়েকের পদ খারিজের দাবি জানিয়েছে এনসিপির শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি।
রবিবার দুপুরে হঠাৎই অনুগামী বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে রাজভবনে যান অজিত। তার পরই হাত মেলান শিন্ডে-বিজেপি সরকারের সঙ্গে। উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন পওয়ারের ভাইপো। তাঁর সঙ্গে আরও আট এনসিপি বিধায়ক শপথগ্রহণ করেছেন। তাঁরা হলেন, ছগন ভুজবল, দিলীপ ওয়ালসে পাতিল, অদিতি টাটকারে, ধনঞ্জয় মুন্ডে, হাসান মুশারিফ, ধরমরাজ বাবারাও আতরাম, সঞ্জয় বাঁসোদে এবং অনিল ভাইদাস পাতিল। অজিত দাবি করেছেন, এনসিপির ৫৩ জন বিধায়কের মধ্যে ৪৩ জনের সমর্থন রয়েছে তাঁর কাছে। বস্তুত, দলত্যাগ আইনের হাত থেকে রেহাই পেতে অজিতের প্রয়োজন ৩৬ জন বিধায়কের সমর্থন। অজিত এ-ও জানিয়েছেন, এনসিপিতে কোনও ভাঙন ঘটেনি। আগামী সব নির্বাচনে তাঁরা এনসিপি-র নাম এবং প্রতীক ব্যবহার করবেন।
অজিতের সিদ্ধান্তে তিনি ‘বিব্রত’ নন বলেই জানিয়েছেন শরদ পওয়ার। রবিবার তিনি বলেছেন, ‘‘যা ঘটল, তাতে আমি একেবারেই বিব্রত নই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এটা নতুন কিছু নয়। ১৯৮০ সালে আমাদের ৫৮ জন বিধায়ক ছিলেন। তার পর সবাই ছেড়ে গিয়েছিলেন। শুধুমাত্র ছ’জন বিধায়ক ছিলেন। তার পরও ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম। যাঁরা আমায় ছেড়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা তাঁদের কেন্দ্রে হেরে গিয়েছিলেন।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এটা গুগলি নয়, রবারি (ডাকাতি)। যাঁরা দলীয় শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করেছেন এবং শপথ নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’’ সোমবারই সেই পদক্ষেপ শুরু করে দিলেন পওয়ার। মহারাষ্ট্রে এনসিপির রাজ্য সভাপতি জয়ন্ত পাতিল জানিয়েছিলেন, দলকে অন্ধকারে রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য নয় বিধায়কের পদ খারিজ করার আর্জি জানাবেন তাঁরা।
সোমবার এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শরদ বলেন, “আমাদের পরিবারে কোনও সমস্যা নেই। আমরা পরিবারে রাজনীতি নিয়ে কোনও আলোচনা করি না।” ভাইপো অজিতের সিদ্ধান্তকে একান্তই ‘ব্যক্তিগত’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।