অশান্ত মণিপুরে টহল কেন্দ্রীয় বাহিনীর। ছবি: সংগৃহীত।
মণিপুরে ফের নিশানায় অসম রাইফেলস। শনিবার সে রাজ্যের কামজং জেলায় অসম রাইফেলসের একটি অস্থায়ী ঘাঁটিতে ভাঙচুরের পর আগুন লাগিয়ে দিল উত্তেজিত জনতা। ওই কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন স্থানীয়দের একাংশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার হংবেং এলাকার নাগা জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকায় বাড়ি তৈরির জন্য কাঠ কেটে নিয়ে যাচ্ছিলেন কয়েক জন। অভিযোগ, কাঠবোঝাই গাড়িটি আটকে দেন অসম রাইফেলসের জওয়ানেরা। তার পর থেকেই শুরু হয় অসন্তোষ।
অন্য দিকে, অশান্তির আশঙ্কায় মণিপুরের কাংপোকপি জেলার গেলজাং মহকুমার একাংশে শনিবার থেকে কার্ফু জারি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত কার্ফু বলবৎ থাকবে। তবে কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে কার্ফু জারির সিদ্ধান্ত, তা অবশ্য খোলসা করা হয়নি। কেবল বলা হয়েছে, জীবন এবং সম্পত্তির নিরাপত্তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। চলতি বছরের একদম গোড়ায় কাংকোপকি জেলায় পুলিশের এক ডেপুটি কমিশনারের দফতরে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে কুকি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত, কাংপোকপির পাহাড়ি এলাকা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকে সরানোর দাবি তুলে আসছে কুকি জনজাতির মানুষেরা। অন্য দিকে, মণিপুরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে শনিবার বৈঠকে বসেন সে রাজ্যের রাজ্যপাল অজয়কুমার ভাল্লা এবং সিআরপিএফ আধিকারিকেরা।
গত বছরের মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত মণিপুর। মাঝে কিছু দিন বিরতির পর গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বাড়িঘর। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহের পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কয়েক জন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের বাড়ির অদূরে বোমা উদ্ধার হয়। এই আবহে গত ৩১ ডিসেম্বর মণিপুরের অশান্তির জন্য সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চান মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী। যা ঘটেছে, তা ভুলে গিয়ে নতুন করে শুরু করার কথা বলেন। তাঁর আশা চলতি বছরে শান্তি ফিরবে মণিপুরে। তবে এর মধ্যেও বার বার অশান্তি ছড়াচ্ছে মণিপুরের বিভিন্ন প্রান্তে।