Ambedkar Remarks Row

শাহের অম্বেডকর-মন্তব্যের নিন্দার জের, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত আরএলডির দলিত মুখপাত্রকে সরিয়ে দিলেন

শুধু নিন্দা নয়, অম্বেডকরকে নিয়ে মন্তব্যের জন্য সরাসরি শাহের ক্ষমাপ্রার্থনার দাবিও তুলেছিলেন জয়ন্তের দল আরএলডির মুখপাত্র কমল গৌতম। ঘটনাচক্রে, কমল নিজেও দলিত নেতা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:০৭

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

‘অপরাধ’ একটাই। কড়া ভাষায় সংবিধানের প্রণেতা বাবাসাহেব অম্বেডকর সম্পর্কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যের সমালোচনা করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, এমন মন্তব্য দলিত ভাবাবেগ আহত করবে। নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার সদস্য তথা রাষ্ট্রীয় লোকদল (আরএলডি) প্রধান জয়ন্ত চৌধরি সে কারণে তাঁর দলের মুখপাত্র কমল গৌতমকে অপসারিত করলেন।

Advertisement

আরএলডি সাধারণ সম্পাদক ত্রিলোক ত্যাগী সোমবার বলেন, ‘‘আমাদের দলনেতা জয়ন্তজির নির্দেশে সব পদ থেকে কমলকে অপসারিত করা হয়েছে।’’ দলের উত্তরপ্রদেশ শাখার সভাপতি রামাশিস রাই বলেন, ‘‘আমরা এনডিএর সহযোগী দল। জোট রাজনীতির দায়বদ্ধতা মেনে নিয়েই রাজনৈতিক অবস্থান স্থির করতে হবে।’’ শুধু মন্তব্যের নিন্দা নয়, সরাসরি শাহের ক্ষমাপ্রার্থনার দাবিও তুলেছিলেন কমল। ঘটনাচক্রে, কমল নিজেও দলিত নেতা। ফলে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় সংবিধানের ৭৫ বছর নিয়ে বিতর্কের শেষে জবাবি বক্তৃতায় শাহ বলেন, ‘‘এখন একটা ফ্যাশন হয়েছে, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর...। এত বার ভগবানের নাম নিলে সাত জন্ম পর্যন্ত স্বর্গ লাভ হত।’’ তার পরেই শাহ বলেন, ‘‘১০০ বার অম্বেডকরের নাম নেওয়া হয়! কিন্তু আমি বলতে চাই, তাঁর প্রতি আপনাদের অনুভূতি কী?’’ জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে অম্বেডকরের অনেক মতপার্থক্য ছিল দাবি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘সেই কারণেই নেহরুর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন অম্বেডকর।’’

শাহের সেই মন্তব্য নিয়ে দিল্লির রাজনীতিতে তুলকালাম বাধে। কংগ্রেস-সহ কয়েকটি বিরোধী দল দাবি তোলে, শাহকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে। কারণ, তিনি সংবিধানের প্রণেতা বাবাসাহেব অম্বেডকরকে ‘অপমান’ করেছেন। শাহের বিরুদ্ধে অম্বেডকর-অবমাননার অভিযোগ এনে রাজ্যসভায় স্বাধিকারভঙ্গের নোটিস দেয় তৃণমূল। তাঁর মন্তব্যকে ‘বিজেপির দলিত বিরোধী মনোভাবের পরিচয়’ বলে আক্রমণ করেন তৃণমূলনেত্রী মমতা। বিরোধী শিবিরের ‘ঐক্যবদ্ধ’ আক্রমণের মুখে শাহকে আগলাতে প্রধানমন্ত্রী মোদী-সহ গোটা বিজেপি এবং সরকারি প্রচারযন্ত্র মাঠে নামে।

শাহ নিজেও সাংবাদিক বৈঠক করে মন্তব্যের সাফাই দেন। কিন্তু তাতে নিরস্ত হয়নি বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনের মকর দ্বারের সামনে দু’পক্ষের বিক্ষোভ, পাল্টা-বিক্ষোভের সময় ধস্তাধস্তিতে বিজেপির দুই সাংসদ, প্রতাপচন্দ্র ষড়ঙ্গী এবং মুকেশ রাজপুত আহত হন বলে অভিযোগ। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গেও বিজেপি সাংসদদের ধাক্কায় মাটিতে পড়ে গিয়ে আঘাত পান বলে অভিযোগ। দুই সাংসদকে আঘাত করার অভিযোগে বিজেপির তরফে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়।

Advertisement
আরও পড়ুন