বিএসপি নেত্রী তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী। ফাইল চিত্র।
নীতীশ কুমারের ডাকা বিজেপি বিরোধী দলগুলির শুক্রবারের পটনা-বৈঠকে যাবেন না উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)-র নেত্রী মায়াবতী। বৃহস্পতিবার টুইট করে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে বিজেপির পাশাপাশি, বিরোধী শিবিরের বৃহত্তম দল কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও দলিত বিরোধী পদক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে দলিত নেত্রীর টুইট-কটাক্ষ, ‘‘ওখানে (পটনায়) তো শুধু হাত মেলানো হবে, হৃদয় মিলবে না।’’
শুক্রবার পটনার জ্ঞান ভবনে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং আরজেডি সভাপতি লালুপ্রসাদের ছেলে তথা বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের ডাকা বিরোধী জোটের বৈঠক হবে। কংগ্রেসের তরফে রাহুল গান্ধী এবং দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে হাজির থাকবেন ওই বৈঠকে, পাশাপাশি, তৃণমূলের তরফে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক, আম আদমি পার্টি (আপ)-র প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল, সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন, জেএমএম সভাপতি হেমন্ত সোরেন, সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারের হাজির থাকার কথা ওই বৈঠকে। জেডিইউর একটি সূত্র জানাচ্ছে, শুক্রবারের বৈঠকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি মায়াবতীকে।
নীতীশদের বৈঠকের মূল লক্ষ্যই হল, আগামী বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী দলগুলির মধ্যে সমন্বয় সাধন করে একজোট হয়ে লড়াইয়ে নামা। কিন্তু তার আগেই বেশ কয়েকটি ঘটনায় বিরোধী ঐক্যের সুর কিছুটা কেটে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনাচক্রে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিশানা হয়েছে কংগ্রেস। অন্য দিকে, জাতীয় স্তরে বিজেপির মোকাবিলায় মমতার ‘তত্ত্ব’ সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন অখিলেশ, কেজরীওয়াল। অন্য দিকে, উত্তরপ্রদেশের অখিলেশের সহযোগী রাষ্ট্রীয় লোকদলের প্রধান জয়ন্ত চৌধুরী বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, বিশেষ কারণে তিনি বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না।
তবে বিরোধী জোট সম্পর্কে মায়াবতীর নেতিবাচক মন্তব্য তেমন প্রভাব ফেলবে না বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। বস্তুত, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে এসপি-বিএসপির বিরোধী জোট মুখ থুবড়ে পড়ার পরে মায়াবতী একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে কার্যত বিজেপি-র ‘বি দল’ হিসেবে কাজ করছেন বলেই মনে করছেন অন্যান্য বিরোধী নেতারা। অভিযোগ, মায়াবতী এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে পুরনো দুর্নীতির মামলা নতুন করে খুঁচিয়ে তুলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই তাঁকে চাপ দিয়েছে। পরিস্থিতি এমনই যে, জয়ের বিন্দুমাত্র আশা নেই জেনেও গত বছর উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের সবক’টি আসনে প্রার্থী দিয়ে বিরোধী ভোট কাটার মতো সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন মায়াবতী। রাজ্যের ৪২৫টি বিধানসভা আসনের মধ্যে মাত্র একটিতে জিতেছিল তাঁর দল। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিজেপি জোটের প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করেছিলেন মায়াবতী।